ব্রেইন স্ট্রোক একটি মারাত্মক অবস্থা, যা মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হলে ঘটে। এটি মস্তিষ্কের টিস্যুকে অক্সিজেন এবং পুষ্টি পেতে বাধা দেয়, যার ফলে স্ট্রোক হয়। জীবনযাপনের এমনকিছু অভ্যাস আছে যা আপনার স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। অস্বাস্থ্যকর খাওয়া থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপন- বিভিন্ন কারণ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
জন হপকিন্স মেডিসিনের গবেষকদের মতে, গর্ভনিরোধক ওষুধ গ্রহণ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে পুরুষের তুলনায় নারীরা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সগর্ভনিরোধক পিলের মধ্যে রয়েছে হরমোন ইস্ট্রোজেন, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এছাড়াও অনেকগুলো কারণ রয়েছে যা ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
ধূমপান একটি ক্ষতিকারক এবং অত্যন্ত মারাত্মক অভ্যাস যা আপনাকে স্ট্রোকের ঝুঁকির দিকে নিয়ে যায়। সেইসঙ্গে এটি আপনার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতাকেও প্রভাবিত করে। জন হপকিন্স মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ করে।
শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অভাব
নিষ্ক্রিয় থাকা কিংবা নিয়মিত ব্যায়াম না করা কেবল আপনার অতিরিক্ত ওজনই বাড়ায় না, বরং এটি বড় ধরনের অসুস্থতার কারণও হতে পারে। এটি আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এবং আপনাকে আরও অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস বাদ দিলে তা আপনাকে শারীরিক যেকোনো মারাত্মক পরিস্থিতি এবং জটিলতা থেকে রক্ষা করতে পারে।
মদ্যপান করলে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি
জন হপকিন্স মেডিসিনের বিশেষজ্ঞদের মতে, মদ্যপান করলে স্ট্রোক হতে পারে। প্রতিদিন মদ্যপান করলে তা রক্তচাপ বাড়ায় বলে জানিয়েছেন তারা। যারা অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর অ্যালকোহল পান করেন, তাদের এই ঝুঁকি বেশি থাকে।
স্ট্রোকের ঝুঁকির অন্যান্য কারণ
ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকির আরও অনেক কারণ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন (এএফ) অর্থাৎ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন ইত্যাদি থেকে হতে পারে স্ট্রোক। পারিবারিক ইতিহাস, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদিও ঝুঁকির কারণ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত।
স্ট্রোকের চিকিত্সা
যখন কেউ স্ট্রোকের সম্মুখীন হয়, তখন সময়ই হলো মূল বিষয়। লক্ষণ শুরু হওয়ার প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি কেউ স্ট্রোকের শিকার হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিত্সার ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা দ্রুত মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ সচল করার চেষ্টা করেন। প্রয়োজনে তারা অস্ত্রোপাচারের সিদ্ধান্ত নেন।bs