যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পরিবর্তন আনতে হয় ফ্যাশনেও। তেমনি চুলে রঙ করা আজকাল ফহ্যাশনের একটি বড় অংশ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে চুলে রঙ করার পর তা দ্রুত হালকা হয়ে যায়। তবে পদ্ধতি জানা থাকলে দ্রুত হালকা হওয়া রোধ করা যায়।
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘সেড্রিক স্যালন’য়ের অ্যারন ব্র্যান্ডফোর্ড বলেন, “রঙের বিবর্ণতা বোঝার জন্য চুলের ধরন সম্পর্কে জানতে হবে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চুলের রং-বিষয়ক এই কারিগর আরো বলেন, “মাথার উপরের স্তর হলো কিউটিকল, যা দেখতে মাইক্রোস্কোপের নিচে একটি খসখসে সাপের চামড়ার মতো লাগে। আর ভেতরের স্তর কর্টেক্স যা কিউটিকলের মাধ্যমে সুরক্ষিত। যেখানে রঞ্জক থাকে। চুলে রং করা এই দুইটি অংশের সঙ্গেই সম্পর্ক যুক্ত। তাপ, জল ও সূর্যালোক এর ওপর প্রভাব ফেলে বিবর্ণতা সৃষ্টি করে।”
জল
শিকাগোর ‘থার্ড কোস্ট স্যালন’য়ের ‘কালার ডিরেক্টর’ ক্রিস্টিন ফ্লেমিং বলেন, “জল ব্যবহার চুলের কিউটিকল খুলে দেয়। ফলে রঙের অণুগুলো বেড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং নিয়মিত চুল ধোয়ার কারণে বিবর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।”
ব্র্যান্ডফোর্ড লক্ষ্য করেছেন যে, কেবল বার বার চুল ধোয়াই না বরং কেমন তাপমাত্রার জল ব্যবহার করা হচ্ছে সেটাও ভূমিকা রাখে। এছাড়াও অন্যান্য বিষয় যেমন- বিভিন্ন অঞ্চলের জলে থাকা খনিজ যেমন- কপার, লবণ ও ক্লোরিন চুলের রং-কে বিবর্ণ করে দিতে পারে।
সমাধান: রং করা চুল ভালো রাখতে যত কম ধোয়া যায় ততই ভালো থাকে। ব্র্যান্ডফোর্ডের পরামর্শ, তিন থেকে চার দিন পর পর চুল ধোয়া উচিত। এর মাঝের সময়ে উন্নত মানের ‘ড্রাই শ্যাম্পু’ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফ্লেমিং এর মতে, ঠাণ্ডা জল দিয়ে চুল ধোয়া নিরাপদ। অথবা যত কম সময়ে চুল ধুয়ে ফেলা যায় ততই ভালো। রং করা চুল পরিষ্কার করতে ‘কালার প্রোটেক্টিং শ্যাম্পু’ ব্যবহার করা প্রয়োজন।
তাপ
ব্র্যান্ডফোর্ড বলেন, “তাপের কারণে কিউটিকলের আকার প্রসারিত হয়। ফলে রংয়ের অণুগুলো পড়ে যায়। যে কোনো তাপের কারণেই এমনটা হতে পারে।”
রং করা চুলে গরম জল ব্যবহার করা ঠিক নয় এবং তাপীয় যন্ত্র ব্যবহার আরও ক্ষতিকারক।
ফ্লেমিং’য়ের মতে, চুলের ক্ষতির জন্য প্রাথমিকভাবে তাপ দায়ী এবং চুলের যত ক্ষতি হবে তত বেশি ভঙ্গুর হবে। আর চুলে রং ধরে রাখতে পারে না।
সমাধান: “তাপ থেকে চুল বাঁচাতে চুলে স্টাইল করার আগে ‘হিট প্রটেকশন’ ধরনের পণ্য ব্যবহার করা উচিত”, বলেন ফ্লেমিং।
তাছাড়া, ‘হিট প্রটেকশন’ ব্যবহার করলেও তাপীয় যন্ত্র সবচেয়ে কম মাত্রায় ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
সূর্যরশ্মি
ফ্লেমিং এর মতে, “সুর্য রশ্মি রং করা চুলের রাসানিক যৌগ ভেঙে দেয়। ফলে রং বিবর্ণ হয়ে যায়। এমনকি চুলের প্রাকৃতিক রংও নষ্ট হয়।”
সূর্যের আলোতে গেলে চুলের রংয়ের যে পরিবর্তন দেখা যায় তা বাইরে অনেকক্ষণ রোদে থাকার কারণে হয়ে থাকে।
সমাধান: সূর্যের আলো থেকে ত্বক বাঁচাতে যেমন সানব্লক ব্যবহার করা হয় তেমনি চুলকে সুরক্ষিত রাখতে ‘লিভইন কন্ডিশনার’ ব্যবহার করা প্রয়োজন। এছাড়াও চুল ভালো রাখতে টুপি পরা বা স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখা ভালো সমাধান বলে মনে করেন, ফ্লেমিং।