যাঁরা সারাদিন অফিসে একটানা বসে কাজ করেন, তাঁদের অনেকের জীবনেরই সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায় পিঠে ব্যথার সমস্যা। মনে রাখবেন, আমাদের পিঠের দিকে যে সব মাসল, লিগামেন্ট, জয়েন্ট বা হাড় থাকে, তাদের কাজ যথাযথ না হলেই এই ধরনের ঝামেলায় ভুগতে হয়। তাই নিয়মিত পিঠের মাসলগুলিকে সচল রাখার জন্য ব্যায়াম করা উচিত। ওয়েট ট্রেনিং করলে মাসলের শক্তি বাড়ে ধীরে ধীরে। তবে এটাও ঠিক যে বাড়তি স্ট্রেন, কোনও চোট-আঘাত বা আর্থারাইটিসের মতো সমস্যাতেও পিঠের ব্যথা হতে পারে। কারণ যাই হোক না কেন, আরাম পাওয়ার জন্য কী করবেন?
প্রথমেই ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার ব্যবস্থা করুন: শরীরের যে কোনও অঙ্গে ব্যথা হচ্ছে মানেই সেখানে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ হয়েছে। আপনাকে প্রথমে সেই প্রদাহ কমাতে হবে। আর তাতে সাহায্য করবে আইস প্যাক। দিনে দু’-তিনবার যদি অন্তত 20 মিনিটের জন্য আইস প্যাক দিতে পারেন পিঠে, তা হলে নিশ্চিতভাবে আরাম মিলবে। দিন দুয়েক পর ব্যথা একটু কমলে অবশ্য গরম সেঁক দেওয়া যায়।
স্ট্রেচিং করুন: ব্যায়াম করার ইচ্ছে না থাকলেও অন্তত স্ট্রেচিং করাটা খুব জরুরি। তাতে রক্ত চলাচলের হার ভালো হয়। যোগব্যায়ামে খুব ভালো স্ট্রেচিং হয়। বাড়িতেও আপনি মামুলি কতগুলো স্ট্রেচ ট্রাই করে দেখতে পারেন। ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা ছাড়ার আগেই হাত দুটোকে টানটান করে মাথার উপর তুলে দিন। পায়ের পাতা ঠেলে যত দূরে পারেন নিয়ে যান। যতক্ষণ সম্ভব হোল্ড করে রাখুন। সোজা দাঁড়িয়ে হাত তুলে দিন মাথার উপর, তার পর ধীরে ধীরে নামিয়ে এনে পায়ের পাতা ছুঁতে হবে। পা যেন না ভাঙে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সর্বাঙ্গাসন, উষ্ট্রাসনও করতে পারেন।
পশ্চার ঠিক করুন: আপনি চেয়ারে একেবারে পিঠ টানটান করে সোজা হয়ে বসেন তো? সামনের দিকে ঝুঁকে বা কুঁজো হয়ে বসলে কিন্তু পিঠের উপর বেশি চাপ পড়বে। কাঁধ সোজা রাখবেন, পেলভিসের উপর বেশি চাপ দেওয়া চলবে না। এগুলি মেনে চললে পিঠে ব্যথা হওয়ার কথা নয়।
জুতো বদলান: পিঠে ব্যথা শুরু হলেই একবার জুতো বদলে দেখুন। যাঁরা স্নিকার্স পরেন সর্বক্ষণ, তাঁরা আরামদায়ক হিলে পা গলান। যাঁরা হিল বা ফ্ল্যাট পরেন তাঁরা বেছে নিন স্নিকার্স। দেখুন ব্যথা কমছে কিনা। টানা দু’-তিনদিন নতুন স্টাইলের জুতো ব্যবহার করে যদি আরাম মেলে, তা হলে বুঝতে হবে যে সেখানেই সমস্যাটা হচ্ছিল।
স্ট্রেস কমান, ঘুমোন বেশি: স্ট্রেসের কারণেও শরীরের বিশেষ বিশেষ অঙ্গে ব্যথার বোধ জেগে উঠতে পারে। তাই স্ট্রেস কমানো ও ঘুমের সময় বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে। সোজা শুতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়, যাঁরা পাশ ফিরে শুতে অভ্যস্ত তাঁরা পায়ের ফাঁকে বালিশ রাখার ব্যবস্থা করুন।