অজান্তেই নারীরা তাদের প্রেমিকের শরীরের গন্ধ নিতে পছন্দ করেন। অনেকে তো প্রেমিকের পরা কাপড় নিজ সংগ্রহে রাখেন ও সেটির গন্ধ উপভোগ করেন।
বিষয়টি অদ্ভুত হলেও কিন্তু এই অভ্যাসের উপকারিতা আছে। জানলে অবাক হবেন, সঙ্গীর শরীরের গন্ধ অ্যান্টি-স্ট্রেসের কাজ করে। মানসিক চাপ কমাতে প্রেমিকের শরীরের গন্ধ বেশ কার্যকর, এমনটিই জানাচ্ছে এক গবেষণা।
জার্নাল অব পারসোনালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকোলোজি’তে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটিই জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণা অনুসারে, প্রেমিকের শরীরের গন্ধ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণায় ৯৬ জন নারী অংশগ্রহণ করেন, যারা পুরুষের ব্যবহৃত শার্টের গন্ধ নেন। ওই শার্টগুলোতে ডিওডোরেন্ট, পারফিউম বা গন্ধযুক্ত অন্য কোনো পণ্য ব্যবহার না করে ২৪ ঘণ্টার জন্য পুরুষদেরকে পরতে বলা হয়েছিল।
শরীরের গন্ধ ছাড়া শার্টে যাতে অন্য কোনো গন্ধ না লাগে এজন্য তাদেরকে এমন কিছু না খেতে কিংবা ধূমপান না করতে নিষেধ করা হয়েছিল।
গবেষণায় অংশগ্রহণ করা নারীদেরকে ৩ ধরনের শার্ট শুঁকতে দেওয়া হয়েছিল। একটি তার সঙ্গীর, একটি অন্য ব্যক্তির ও একটি নিরপেক্ষ বা অপরিচিত একজনের পরা শার্ট।
প্রতিটি নারীর চোখ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ও একেক দলকে ভিন্ন ভিন্ন শার্ট শুঁকতে দেওয়া হয়েছিল। তাদের দেহে কর্টিসলের (একটি স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা পরিমাপের জন্য লালার নমুনাও নেওয়া হয়েছিল।
এমনকি তারা কেমন মানসিক চাপ অনুভব করছিলেন সে সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল।
ফলস্বরূপ দেখা যায়, যে নারীরা তাদের সঙ্গীর শার্টের গন্ধ নিয়েছেন তারা পরীক্ষার আগে ও পরে উভয় ক্ষেত্রেই কম চাপ অনুভব করেছেন যারা অপরিচিত ব্যক্তির শার্ট শুঁকেছেন তাদের তুলনায়।
মজার বিষয় হলো, যারা অপরিচিত ব্যক্তির শার্ট শুঁকেছিলেন তাদের মধ্যে কর্টিসলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। আর যারা তাদের সঙ্গীর গন্ধ চিনতে পেরেছিলেন তারা আরও কম চাপে ছিলেন।
এই গবেষণার ফলাফল বিবেচনা করে গবেষকরা দাবি করেন, প্রেমিকের গন্ধের প্রভাব এমনকি তার অনুপস্থিতিতেও প্রেমিকার মন ভালো রাখে ও মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই নয়, পুরুষরাও কিন্তু তার প্রেমিকার শরীরের গন্ধ নিতে ভালোবাসেন। প্রেমিকার শরীরের গন্ধ দ্বারা বেশি প্রভাবিত হন পুরুষরা।
তবে প্রেমিকার শরীরের গন্ধ পুরুষের মানসিক চাপ কমাতে পারে কি না সে বিষয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।