মানুষসহ সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষায় নিয়মিত ঘুম আবশ্যক। নিয়মিত ঘুম মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তবে অনেকের রাতে দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস।
অফিস বা অন্যান্য প্রয়োজনে সকালে সঠিক সময়ে উঠতে তারা ঘড়ি বা মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। অথচ অ্যালার্মের শব্দে ঘুমা ভাঙা ভয়াবহ সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।
ঘুম থেকে উঠতে অ্যালার্ম ব্যবহারে যেসব ক্ষতি—
হৃদরোগে ঝুঁকি
অ্যালার্ম দিয়ে ঘুম থেকে ওঠায় হার্টের ক্ষতি হয়। যারা কম ঘুমানোর জন্য অ্যালার্ম দিয়ে দ্রুত জেগে ওঠেন, তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
কম ঘুম ব্লাড সুগারের ওপর প্রভাব ফেলে ও ইনসুলিন সেনসেটিভিটি হ্রাস করে। একজন তরুণ মানুষ যিনি সপ্তাহের ছয় রাত চার ঘণ্টা করে ঘুমান, তার মধ্যে প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। পরবর্তী এক সপ্তাহ তিনি যদি তার ঘুমের সময়কাল বাড়িয়ে দেন, তবে তিনি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন।
পেট-বুক জ্বালাপোড়া
প্রতিদিনের ঘুমের খুব সামান্য হেরফের আপনার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি যদি রাতে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে পারেন, তবে উপকার পাবেন। কম ঘুমের সাথে পেট ও বুকের জ্বালাপোড়ার গভীর যোগসূত্র রয়েছে।
বিষণ্ণতা
যারা কম ঘুমান বা সকালে ঘুম পূর্ণ না করেই জেগে ওঠেন, তাদের ৯০ শতাংশ মানুষ বিষণ্ণতায় ভোগেন। যাদের ইনসমনিয়া, স্লিপ এপনিয়া এ ধরনের স্লিপিং ডিসঅর্ডার আছে, তাদের অধিকাংশই বিষণ্ণতার রোগী। দেখা গেছে, যারা কম ঘুমায় তাদের সুইসাইড করার প্রবণতা বেশি থাকে।
এছাড়াও যেসব ক্ষতি হয়—
১. দীর্ঘদিন ধরে গভীর ঘুমকে অ্যালার্ম দিয়ে ভাঙালে শরীরে নানাবিধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
২. খুব বেশি পরিমাণে আপত্কালীন অ্যাড্রিনালিন হরমোন ক্ষরণ হয়। অ্যাড্রিনালিন হরমোনের অধিক ক্ষরণে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
৩. হৃদযন্ত্রের ওপর খুব বেশি চাপ পড়াটাও ক্ষতিকারক। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ে।
৪. লক্ষ্য করবেন, অ্যালার্মে ঘুম ভেঙে গেলেও বেশ কিছুক্ষণ ঘুমভাব থেকে যায়। কাজ করার এনার্জি থাকে না।
৫. ঠিকঠাক ঘুম না হলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। মাথায় যন্ত্রণা অনুভব করে থাকবেন।
৬. অবসাদ বাড়িয়ে তোলে। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ক্রমশ লোপ পায়।
ফলে প্রতিদিনের সুস্থতায় কাজ, খাওয়া, ব্যায়াম যেমন জরুরি তেমনই পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। তাই দিনের শেষে একটি সুন্দর ও ঝঞ্জাটমুক্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।bs