মধুর অসাধারণ কিছু গুনাগুন, যা জানা নেই 70 % লোকদেরও।

মুখের ভাষা মধুর মতো হবে বলে অনেকে শিশুর মুখে মধু দেন। যদিও এর কোনো ভিত্তি নেই এবং শিশুর বয়স এক বছর হওয়ার আগে কোনোভাবেই তাকে মধু খেতে দেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু মধু যে আমাদের জন্য ভীষণ উপকারী, একথা তো মিথ্যা নয়! মধুর গুণ সংখ্যায় কিন্তু কম নয়, বরং অসংখ্য। এটি খেলে উপকার মেলে সেইসঙ্গে ত্বক ও চুলের জন্যও ভীষণ উপকারী।

মধু খাওয়া যায় নানা উপায়ে। কেউ হালকা গরম জলর সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খান, কেউ খান চায়ের সঙ্গে। স্বাস্থ্যকর যেকোনো উপায়ে খেলেই পাবেন উপকার। মধুর অসংখ্য গুণের মধ্যে কয়েকটি সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে মধু। আমাদের শরীরের ভেতর এবং বাইরে সব ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে মধু। মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে। ফলে শরীর সংক্রমণ থেকে দূরে থাকে।

ওজন কমায়

যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য একটি উপকারী খাবার হতে পারে মধু। আপনি যদি নিয়মিত মধু খান তবে পাকস্থলীতে তৈরি হবে বাড়তি গ্লুকোজ। গ্লুকোজ মস্তিষ্কের সুগার লেভেল বাড়াতে কাজ করে। যে কারণে শরীরের মেদ কমানোর হরমোন নিঃসরণের জন্য বেশি মাত্রায় চাপ সৃষ্টি করে। ফলে মেদ কমানো সহজ হয়।

অনিদ্রা দূর করে

অনিদ্রার সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। এদিকে আমাদের সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ভীষণ জরুরি। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে মধু। কারণ ঘুমের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে মধু। প্রতি রাতে নিয়ম করে মধু খেলে ঘুম গভীর হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

আমাদের অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে চলেছে। এই সমস্যা পরবর্তীতে বড় বিপদের কারণ হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য সারানোর ক্ষেত্রে কাজ করে মধু। এতে আছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কাজ করে। শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই নয়, ডায়রিয়া সারাতেও কাজ করে মধু। যাদের আমাশা, ডায়রিয়া বা পেট খারাপের প্রবণতা রয়েছে তারা নিয়মিত মধু খেতে পারেন।

হজমের সমস্যা দূর করে

মধুর মধ্যে থাকা উপাদানগুলি হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে খাবার খাওয়ার পর বদ হজম, গলা বুক জ্বালা ইত্যাদি সমস্যা দূর হয়। মধু খেলে পাকস্থলীর কাজ জোরালো হয়। কারণ এটি হজমে সাহায্য করে। এর ব্যবহার হাইড্রোক্রলিক অ্যসিড ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। তার ফলে পাকস্থলীর কাজ ভালো হয়।

অরুচি দূর করে

খাবারে অরুচি থাকলে কোনো খাবারই খেতে ভালোলাগে না। যে কারণে খাবার কম খাওয়া হয় এবং শরীরে পুষ্টি সঠিকভাবে পৌঁছায় না। অরুচির এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে মধু। নিয়মিত মধু খেলে খাবারের প্রতি অরুচি দূর হয়। খাবারের প্রতি আকর্ষণও বাড়ে। শুধু অরুচি নয়, বমি বমিভাবও দূর করে এই মধু।

রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে

আমাদের শরীরে যে উপাদান রক্ত উৎপাদন করে সেটি হলো আয়রন। প্রচুর আয়রন রয়েছে মধুতে। ফলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা-সহ রক্তের ইত্যাদি উপাদানগুলো গড়ে তুলতে সাহায্য করে মধু।

সর্দি কাশি কমায়

আমাদের দেশে সর্দি-কাশি হলেই মধু খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে ঠান্ডার সমস্যা দূর করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে মধু। গলার স্বরযন্ত্রে বা স্বরনালীতে সংক্রমণ হলেও সেই ক্ষত দূর করতে মধু খেতে পারেন। এটি ক্ষত নিরাময় করে। সেইসঙ্গে দূর করে সংক্রমণও।

ব্যথা কমায়

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হলে মধু খেয়ে নিন। কারণ গাঁটে বা জয়েন্টে ব্যথায় কষ্ট পেলে তা কমাতে কাজ করবে মধু। গাঁটে বা জয়েন্টে ব্যথার অন্যতম কারণ হলো শরীরের অবাঞ্ছিত রস। এই রসের কারণেই ব্যথার সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষতিকর রস দূর করতে কাজ করে মধু।

দুর্বলতা দূর করে

শরীর সারাক্ষণই দুর্বল লাগে? এক্ষেত্রে আপনার ঝিমুনি, ঘুম ঘুম বা দুর্বল ভাব কাটানোর জন্য কাজ করবে মধু। আপনি যদি নিয়মিত মধু খান তবে সারাক্ষণ সতেজ ও উৎফুল্ল থাকতে পারবেন। দুর্বলতা দূর হবে সহজেই।

তারুণ্য ধরে রাখে

মধুতে থাকে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের রং উজ্জ্বল করে, ত্বকে টানটান ভাব ধরে রাখে। যে কারণে ত্বকে বলিরেখা পড়ে না। শুধু খাওয়াই নয়, রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে মধু। নিয়মিত ত্বকে ও চুলে মধু ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy