অজান্তেই ফুসফুস অকেজো হয়ে যাচ্ছে না তো? বিস্তারিত জানতে পড়ুন

শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হলো ফুসফুস। বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে রক্তপ্রবাহে পরিবহণ করে ফুসফুস। একই সময় শরীরের ভেতরে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দিতে সহায়তা করে ফুসফুস।

রক্তে অক্সিজেন বহন করা ছাড়াও ফুসফুসের আরও অনেক কাজ আছে। ফুসফুস শরীরের পিএইচ এর ভারসাম্য বজায় রাখে। শরীরে সংক্রমণ-সৃষ্টিকারী অণুজীবের আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসে উপস্থিত মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স তা দূর করে।

যদি ফুসফুসে খুব বেশি চাপ পড়ে ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ ঘটে, তাহলে ফুসফুস দুর্বল হতে শুরু করে। এজন্য সময়মতো ফুসফুসের স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

বেশিরভাগ মানুষই বুকে ব্যথা বা সামান্য কাশি বা শ্বাসকষ্টকে সাধারণ ভেবে অবহেলা করেন। তবে এটি ফুসফুসের ক্ষতির প্রথম লক্ষণ হতে পারে।

ফুসফুস অকেজো হওয়ার লক্ষণ কী?
দীর্ঘস্থায়ী কাশি

আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট অনুসারে, কেউ যদি ৮ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঠান্ডা বা কফের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে বুঝতে হবে এটি দীর্ঘস্থায়ী কফ। দীর্ঘস্থায়ী কাশি ফুসফুসের ক্ষতির প্রথম লক্ষণ হতে পারে। এটা উপেক্ষা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

শ্বাসকষ্ট

কোনো কাজ করার সময় শ্বাসকষ্ট হলে তা ফুসফুসের ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। আপনার যদি ক্রমাগত শ্বাস নিতে সমস্যা হয় তবে এটিকে কখনই হালকাভাবে নেবেন না। এছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হওয়া বা শব্দ হওয়ার লক্ষণ কিন্তু ফুসফুসের শ্বাসনালি সরু হয়ে যাওয়ার লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এমনটি ঘটলে সতর্ক থাকুন দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কাশি সঙ্গে রক্ত পড়া

কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া ফুসফুসের রোগের প্রধান লক্ষণ। রক্ত যেখান থেকে আসুক না কেন, এই লক্ষণ হতে পারে মারাত্মক। এমনকি ফুসফুস ক্যানসারেরও লক্ষণ হতে পারে এটি।

বুকে ব্যথা

বুকে ব্যথা যদি এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে থাকে, বিশেষ করে যখন আপনি কাশি বা শ্বাস নিচ্ছেন, এটি ফুসফুসের গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। এসব লক্ষণ দেখলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত।

ক্রনিক মিউকাস

মিউকাস ফুসফুসের সুরক্ষা বা বাহ্যিক আক্রমণ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে শ্লেষ্মা তৈরি হয়। তবে যখন এটি খুব বেশি হয়ে যায় ও একমাস বা তার বেশি সময় ধরে বুকে বিরক্ত করে, তখন এটি ফুসফুসের রোগের লক্ষণ হতে পারে।

প্রতিবছর বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ হাঁপানি, নিউমোনিয়াসহ ফুসফুসের কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসনালি দিয়ে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশের কারণে ফুসফুসের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দীর্ঘদিন এমনটি হলে দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এড়িয়ে চলা, নিয়মিত ব্যায়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্টপূর্ণ একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও সমস্যাগুলো প্রাথমিক সনাক্তকরণের মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। তাই এ বিষয়ে সবারই সতর্ক থাকা জরুরি।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy