পেটের মেদ কমানো বেশ কষ্টকর। সঠিক খাদ্যাভ্যাস পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। আর ব্যায়ামের পাশাপাশি যদি সঠিক খাবার খাওয় যায় তবে পেটের মেদ কমবে দ্রুত।
মটর
সেন্ট লুইস মিজোরি’র নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এবং ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠাতা কিম ওয়াইটজ ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “উচ্চ দ্রবণীয় আঁশ পেটের মেদ কমাতে সহায়ক।”
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েক ফরেস্ট ইউনিভার্সিটি’র ‘সেকশন অফ এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম’য়ের করা গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে এই প্রতিবেদনে আরও জানানো, “দৈনিক ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ গ্রহণে প্রায় চার শতাংশ গলাতে সহায়তা করে।”
মটর দ্রবণীয় আঁশের ভালো উৎস। তাই পেটের মেদ কমাতে চাইলে খাবার তালিকায় মটর রাখা যেতে পারে।
টক দই
সকালের নাস্তা বা দুই বেলার খাবারের মাঝে মিষ্টি ছাড়া মসৃণ দই পেটের ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে।“এতে রয়েছে প্রোটিন যা পেট ভরা রাখে। পর্যাপ্ত প্রোটিন মেদ কমাতে, বিপাক বাড়াতে এবং পেশির কোষ ভালো রাখতে সহায়তা করে,” বলেন যুক্তরাষ্ট্রের যমজ পুষ্টিবিদ নিউট্রিশনটুইন্স ডটকম’য়ের লিজি লাকাটোস এবং ট্যামি ল্যাকাটোস শামস।
বাদাম
নিউ জিল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগো’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস’য়ের করা গবেষণার বরাত দিয়ে পুষ্টিবিদ ওয়াইটজ বলেন, “গবেষণায় দেখা যায়, যারা বেশি বাদাম খান তাদের পেট অপেক্ষাকৃত সমতল থাকে। আখরোট এক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।”প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যারা প্রতিদিন আখরোট খান তাদের মেদ কাটানো হরমোন ‘অ্যাডিপোনেকটিন’ বেশি কার্যকর থাকে। ফলে কোমরের মাপ ও দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে এই গবেষণায় দেখা গেছে।
অ্যাডিপোনেকটিনের মাত্রা বাড়াতে তিনি আধা কাপের কম আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেন। আখরোট যেমন মেদ গলাতে সক্ষম তেমনি আবার অতিরিক্ত আখরোট খাওয়া ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে বলে জানান এই পুষ্টি-বিশেষজ্ঞ।
গাজর
ওয়াইটজ বলেন, “ক্যারোটেনয়েডস’য়ের জন্য সবজি বা ফলের রং লাল, হলুদ বা কমলা হতে পারে। জাপানের হিরোসাকি ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ক্যারোটেনয়েডস সমৃদ্ধ খাবার খান তাদের মধ্যে পেটের মেদ জমার প্রবণতা কম।”
গাজর, কুমড়া, পালংশাক, কপি, টমেটো, মিষ্টি আলু, ব্রকলি, মরিচ ইত্যাদি পেট সমতল রাখতে বেশ জনপ্রিয় খাবার হিসেবে বিবেচিত।
কমলার রস
এবার থেকে কমলার রস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। বিশেষ করে যেসব কমলার রসে আলাদা করে পুষ্টি ও ভিটামিন যোগ করা হয়। যাকে বলে ‘ফরটিফাইড অরেঞ্জ জুস’।কোনেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ডে অবস্থিত ‘মাস্টার দ্যা মিডিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা এবং ভেষজ পুষ্টিবিদ এমি গোরিন বলেন, “ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম যোগ করা কমলার রস পান, পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে।”
‘দ্যা আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’য়ে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানান যায়, যারা দৈনিক ১০০ ইইউ ভিটামিন ডি এবং ৩৫০ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সুরক্ষিত কমলার রস পান করেন তাদের পেটের মেদ অন্যদের তুলনায় দ্রুত হ্রাস পায়।
তবে খেয়াল রাখতে হবে প্যাকেটজাত যে কোনো কমলার রসে আলাদা করে চিনি বা মিষ্টি যেন মেশানো না থাকে।