আশ্চর্য গাছের নাম পাথরকুচি। এই আশ্চর্য গাছের গুণাবলী শুনলে আপনিও আশ্চর্য হয়ে যাবেন। পাথরকুচি পাতা যে কতভাবে আমাদের শরীরের উপকার করে থাকে তার ইয়ত্তা নেই।
কিডনির পাথর অপসারণে পাথরকুচি পাতা
পাথরকুচি পাতা কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুই বার ২ থেকে ৩ টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খান।
জন্ডিস নিরাময়ে
লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী।
সর্দি সারাতে
অনেক দিন ধরে যারা সর্দির সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য পাথরকুচি পাতা অমৃতস্বরূপ। পাথরকুচি পাতার রস একটু গরম করে খেলে সর্দির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ক্ষত স্থান সারাতে
পাথরকুচি পাতা জল ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করলে ক্ষত তাড়াতাড়ি সেরে যায়। পাথরকুচি পাতা বেটেও কাটাস্থানে লাগাতে পারেন।
এছাড়াও-
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্রথলির সমস্যা থেকে পাথরকুচি পাতা মুক্তি দেয়।
শরীরের জ্বালা-পোড়া বা আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা করে।
পাথরকুচি পাতা বেটে কয়েক ফোঁটা রস কানের ভেতর দিলে কানের যন্ত্রণা কমে যায়।
কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশয় রোগ সারাতে পাথরকুচি পাতার জুড়ি নেই। ৩ মি.লি. পাথরকুচি পাতার জুসের সাথে ৩ গ্রাম জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন পর্যন্ত খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস্ ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ত্বকের যত্নে
পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে জল থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাথে সাথেই এর মধ্যে জ্বালা-পোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্বন্ধে অনেক সচেতন তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি জাতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এশিয়ার নীরব ঘাতক সুপারি
বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ এই সুপারি খান। কোথাও এটিকে দেখা হয় ভালোবাসার প্রতীক এবং বদহজম ও বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার প্রতিকার হিসেবে।
আপনি জানেন কি এই সুপারিই প্রতিবছর হাজার-হাজার মানুষের মৃত্যুরও কারণ? এর কার্যক্ষমতা এতটাই বেশি যে নিকোটিন, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইনের পাশাপাশি একেও মতিবিভ্রমকারী মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এশিয়ার নীরব ঘাতক সুপারি
যদিও নারী এবং শিশুসহ অনেকেই এটি ব্যবহার করেন, তবে কর্মক্ষম পুরুষদের মাঝেই সুপারির ব্যবহার বেশি।
গাড়ি চালানো, মাছ ধরা কিংবা নির্মাণকাজের মতো কর্মকাণ্ডে দীর্ঘসময় জেগে থাকার জন্য এটি তারা সুপারি চিবান।
তবে এই সুপারিতে অভ্যস্তদের উচ্চমাত্রায় মুখের ক্যানসারের আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। এমনকি প্রথমবার সুপারি ব্যবহার করার কয়েক দশক পরেও কারো মুখে ক্যানসার হতে পারে।
এশিয়ার যে কয়টি এলাকায় সুপারি খুব বেশি জনপ্রিয় তার একটি তাইওয়ান। সেখানে সুপারিকে বলা হয় ‘তাইওয়ানের চুইংগাম’।
দেশটির সরকার এখন কয়েক শতকের পুরনো এই অভ্যাসটি কমিয়ে আনা এবং প্রতিবছর হাজার-হাজার জীবন ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর ফলে ২০১৩ সালে দেশটিতে সুপারি ব্যবহারকারী পুরুষের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমেছে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মুখের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হান লিয়াং-জুন বলেন, ‘অর্ধেক মানুষ এখনো জানেই না যে সুপারি মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ।’
এশিয়ার অনেক অঞ্চলে সুপারি স্থানীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কাঁচা, শুকনা কিংবা পানপাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়।।
যদিও পানের খিলি বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে বানানো হয়। তবে সাধারণতঃ চুন, পানপাতা, এলাচি বা দারচিনির মতো মশলা এবং তামাকের সাথে মিশিয়ে এই খিলি তৈরি করা হয়।
আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে এলাচ এবং দারচিনি ছাড়া বাকি সব উপাদানকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
চুনকে বিশেষ একটি সমস্যা হিসেবে দেখা হয়, কারণ এটি ব্যবহারের ফলে মুখের ভেতর ছোট-ছোট অনেক ক্ষত তৈরি হতে পারে।
ক্যানসার সৃষ্টিকারী অনেক উপাদান এসব ক্ষতের মাধ্যমে চামড়ার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।