ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ড্রেসিং টেবিলে ভিড় বাড়ে প্রসাধনীর। ফেসওয়াশ থেকে শুরু করে সিরাম, টোনার জায়গা করে নেয় স্কিনকেয়ার রুটিনে। ত্বকের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সেগুলি সব নামি দামী ব্র্যান্ডেরই কিনে থাকেন অনেকে। কেউ আবার সস্তা প্রোডাক্ট দিয়েই কাজ চালান। তাতে মানের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ় করতে হয় বৈকি। এ দিকে এ সব বিউটি প্রোডাক্ট নিয়ম করে লাগালে ত্বকের জেল্লা নাহয় বাড়ে। কিন্তু এর থেকে আবার বড় কোনও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো?
একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে, সাজগোজের প্রসাধনী থেকে নাকি ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তা যদি আবার নিম্নমানের হয়, তা হলে ক্যান্সারের ঝুঁকি হয় দ্বিগুণ। এ বিষয়ে পরামর্শ দিলেন ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ ড. জেনেট হোল্ডার।
বিউটি প্রোডাক্ট কি ক্যান্সারের কারণ?
বাজার চলতি নামী দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী মানেই নিরাপদ। এই ধারণা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। প্রচুর নামী দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনীতেও এমন কিছু কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে সব প্রসাধনী থেকে ত্বকে অস্বস্তি জ্বালাপোড়া হয়, তা থেকে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় বলেই জানিয়েছেন তিনি। এ দিকে বাজার চলতি নিম্ন মানের প্রসাধনীতে এ সব কেমিক্যাল থাকার সম্ভাবনা বেশি। তাই দীর্ঘদিন তার ব্যবহারে কিন্তু ক্যান্সারের আশঙ্কাও বাড়ে।
প্রসাধনীর কার্যকারিতাও একটা ফ্যাক্টর
এ দিকে কোনও প্রসাধনীর কার্যকারিতা ঠিক না থাকলেও বাসা বাঁধতে পারে ক্যান্সার। আমাদের সকলেরই জানা, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে মারাত্মক ক্ষতি করে। এমনকী এর কারণে ত্বকের ক্যান্সারও হতে পারে। তাই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রকোপ থেকে ত্বককে বাঁচাতে সানস্ক্রিন লাগানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তা হতে হবে ৩০ বা তার বেশি এসপিএফ-এর। তবেই তা অতিবেগুনি রশ্মির কাছে ঢাল হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এই সানস্ক্রিনেরই যদি কার্যকারিতা ঠিক না থাকে তাহলে সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রে আমাদের ত্বকের সংস্পর্শে আসবে। তার জন্য ত্বক অকালে বুড়িয়ে যাবে। পাশাপাশি স্কিন ক্যান্সারও হতে পারে।
প্রোডাক্ট দেখে কিনতে হবে
প্রসাধনীতে উপস্থিত নির্দিষ্ট কিছু কেমিক্যালের কারণেই ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ে। তাই সবসময় বিউটি প্রোডাক্ট কেনার আগে তার উপাদানের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো ঠিক কোন কোন রাসায়নিক মূলত ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এই তালিকায় রয়েছে-
ট্রাইক্লোসান: মূলত টুথপেস্ট, মাউথ ওয়াশ, সাবান এবং ডিওডোরেন্টে এই রাসায়নিকের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
ট্যালক: কমপ্যাক্ট পাউডার, আইশ্যাডো, ব্লাশ, কনট্যুর পাউডারে কিন্তু এর হদিশ মেলে।
ফর্ম্যালডিহাইড: নেইল পলিশ, শাওয়ার জেল, বডি লোশনে পাওয়া যায় এই উপাদান।
কোল টার: হেয়ার ডাই এবং খুশকি সারানোর প্রোডাক্টের উপাদানের তালিকায় কখনও এটিও চোখে পড়তে পারে।
প্যারাবেন: কিছু কিছু কোম্পানির ময়েশ্চারাইজ়ার, ফেসওয়াশে প্যারাবেনের উপস্থিত থাকে।
তাই এই সমস্ত কেমিক্যাল এড়িয়ে স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট বেছে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
তাহলে কী করণীয়?
স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট থেকে ক্যান্সারের আশঙ্কা এড়াতে উপাদান দেখে কিনতে হবে। পাশাপাশি কোনও প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে ত্বকের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সবসময় মেডিসিনাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করাই শ্রেয়। রোজকার ত্বক ও চুলের যত্নের জন্যও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও শ্যাম্পু, সাবান, ক্রিম বা সানস্ক্রিন মাখা যেতে পারে।