কেরালার চোয়ান্নুরের একটি ভাড়াবাড়ি থেকে সম্প্রতি অর্ধদগ্ধ এক পুরুষের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ ৬১ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তের নাম সানি, এবং পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগেও ২০০৩ ও ২০০৫ সালে দুটি খুনের মামলায় তার নাম জড়িয়েছিল।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ‘অস্বাভাবিক যৌন চাহিদা’ ঘিরে কোনও বিবাদের জেরেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
ধোঁয়া দেখে চমকে ওঠেন প্রতিবেশীরা
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় সানির ভাড়া নেওয়া ঘর থেকে আচমকা ধোঁয়া বেরোতে দেখে স্থানীয় প্রতিবেশীরা কুন্নামকুলাম থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে অর্ধদগ্ধ দেহটি উদ্ধার করে।
দেখা যায়, সেই সময় থেকেই সানি পলাতক। পরে রাতে থ্রিসুরের শক্তান বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, সানি দাবি করেছে, নিহত ব্যক্তিকে সে ভালো করে চিনত না। রবিবার একটি মদের দোকানে তাদের প্রথম আলাপ হয়। এরপর মদ্যপানের নাম করে ওই ব্যক্তিকে নিজের ঘরে নিয়ে আসে অভিযুক্ত।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সানি ওই ব্যক্তিকে ‘অস্বাভাবিক যৌনতার’ জন্য জোরাজুরি করেছিল। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হলে সানি ওই ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সেই আঘাতেই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপর অপরাধ ঢাকতে সানি দাহ্য তরল পদার্থ ব্যবহার করে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
একটি সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশের হাতে এসেছে, যেখানে রবিবার সানির সঙ্গে নিহত ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। সিসিটিভিতে দেখা যায়, মদ খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে সানি ওই ব্যক্তিকে ঘরে নিয়ে যায়।
অতীতেও খুনের অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সানির বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে এক আত্মীয়কে খুনের অভিযোগ ছিল। ২০০৫ সালে আবার এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল অভিযুক্ত। খবর অনুযায়ী, সেই ঘটনাটিও ‘অস্বাভাবিক যৌন চাহিদা’-ঘিরেই ঘটেছিল। দুটি মামলার মধ্যে একটিতে তার দোষ প্রমাণিত হয় এবং কিছু বছর আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সে থ্রিসুরের একটি দোকানে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছিল।
কুন্নামকুলাম থানার পুলিশ প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করলেও, এখন তা বদলে হত্যা মামলা হিসেবে ধারা সংযোজন করেছে। নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থ্রিসুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিচয় শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ সমস্ত থানায় পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।