কমবয়সিদের মধ্যে বাড়ছে স্ট্রোকের ঝুঁকি! এর উপসর্গ ও কি করবেন তাৎক্ষণিক জেনেনিন

স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কের কোষগুলোর বেঁচে থাকার অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত সরবরাহ দুই থেকে পাঁচ মিনিটের বেশি বন্ধ থাকলে স্নায়ুকোষ স্থায়ীভাবে ধ্বংস হয়।

স্ট্রোক যেকোনো সময় ঘটতে পারে। এমনটি হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিতে হয়। বিলম্বে চিকিৎসা নিলে জটিলতা বাড়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রাণহানিও ঘটে।

উপসর্গ
♦ শরীরের কোনো একদিকে দুর্বলতাবোধ করা বা নাড়াতে না পারা

♦ হাত-পা অবশ অবশ ভাব

♦ মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া

♦ প্রচণ্ড মাথাব্যথা

♦ কথা অস্পষ্ট হওয়া

♦ বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব

♦ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া

♦ মুখের অসাড়তা, কথা জড়িয়ে যাওয়া

♦ বেসামাল হাঁটাচলা

♦ হঠাৎ খিঁচুনি বা ধপ করে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হওয়া ইত্যাদি।

তাৎক্ষণিক করণীয়
উপরোক্ত উপসর্গগুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে স্ট্রোক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন হলে যা করতে হবে তা হলো :

♦ রোগীকে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এ অবস্থায় কোনো খাবার বা ওষুধ মুখে দেওয়া যাবে না। কারণ এগুলো শ্বাসনালিতে ঢুকে আরো ক্ষতি করতে পারে।

♦ মুখে জমে থাকা লালা, বমি পরিষ্কার করে দিতে হবে।

♦ গায়ে থাকা জামা-কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে।

♦ রোগীকে অতি দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিতে হবে এবং হাসপাতালে যাওয়ার সময় খেয়াল করে রোগীর আগের চিকিৎসার ফাইলপত্র নিতে হবে।

পরীক্ষা
কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে জরুরি ভিত্তিতে ব্রেইনের রেডিওলজিক টেস্ট, সিটিস্ক্যান, এমআরআই করা উচিত। ঘাড়ের রক্তনালির ডপলার, হার্টের সমস্যার জন্য ইকো পরীক্ষা করা উচিত। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতাও পরীক্ষা করে নিতে হবে। প্রয়োজনে এনজিওগ্রাম ও ইকোকার্ডিওগ্রাফি পরীক্ষাও করতে হবে।

চিকিৎসা
স্ট্রোক হলে যেহেতু মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে যায় এবং কম রক্তপ্রবাহ নিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারে না, তাই তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করতে হয়। ওষুধ প্রয়োগ করে রক্তের চাপ, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। রক্তের জমাট বাঁধা অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে। প্রাথমিক ধাপ কাটিয়ে ওঠার পর দীর্ঘদিন ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। তাই স্ট্রোক হয়েছে বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিলম্বে চিকিৎসা নিলে জটিলতা বাড়ে এবং রোগী মারাও যেতে পারে।

প্রতিরোধে করণীয়
♦ নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন

♦ কেউ উচ্চ রক্তচাপের রোগী হলে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খান এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করবেন না।

♦ ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন

♦ নিয়ম করে হাঁটা ভালো

♦ দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন

♦ মানসিক চাপ পরিহার করে চিন্তামুক্ত থাকুন

♦ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

♦ মনে রাখতে হবে, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

Tips24 Desk

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy