অনিয়মিত ঋতুস্রাব হচ্ছে, এর কিছু কারণ জেনেনিন

অনিয়মিত ঋতুস্রাব একটি সাধারণ সমস্যা। তবে অতিরিক্ত ঋতুস্রাবও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। স্বাভাবিক ঋতুস্রাবের পরিমাণ প্রতিটি ঋতুচক্রে গড়ে ৩০-৪০ মিলিলিটার। কিন্তু যখন ৮০ মিলিলিটার বা তার বেশি রক্তপাত হয় তখনই তাকে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব বা হেভি মেনস্ট্রুয়াল ব্লিডিং বলা হয়।

লক্ষণ

অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের লক্ষণগুলি হল:

ঋতুকালীন সময় প্রতি ২-২.৫ ঘন্টায় ন্যাপকিন বা টিস্যু পরিবর্তন করতে হয়
ঋতুকালীন সময় রক্তপাতের পরিমাণ এত বেশি হয় যে তাতে ভেজা জামাকাপড় পরিবর্তন করতে হয়
ঋতুকালীন সময় রক্তপাতের সঙ্গে জমাট রক্ত বা গুঁড়ো রক্ত বের হয়
ঋতুকালীন সময় রক্তপাতের সঙ্গে তলপেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হয়
ঋতুকালীন সময় রক্তপাতের সঙ্গে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, দুর্বলতা বা শ্বাসকষ্ট হয়
কারণ

অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের অনেকগুলি কারণ হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

হরমোনের তারতম্য: ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে। এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা হতে পারে গর্ভধারণ, স্তন্যদান, মেনোপজ, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস), থাইরয়েডের সমস্যা, ইত্যাদি কারণে।
জরায়ুর সমস্যা: জরায়ুর টিউমার, এন্ডোমেট্রিওসিস, জরায়ুর ক্যান্সার, ইত্যাদি কারণে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে।
রক্তের সমস্যা: রক্তের রোগ যেমন অ্যানিমিয়া, রক্তরোগ, ইত্যাদি কারণেও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে।
অন্যান্য কারণ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ব্যায়াম, ইত্যাদি কারণেও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে।
প্রতিকার

অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের কারণ নির্ণয় করে তার চিকিৎসা করা হলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

চিকিৎসা

অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের চিকিৎসায় নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

হরমোন থেরাপি: হরমোন থেরাপির মাধ্যমে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা হয়।
ওষুধপত্র: কিছু ওষুধের মাধ্যমে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব কমানো যায়।
অস্ত্রোপচার: জরায়ুর টিউমার, এন্ডোমেট্রিওসিস, ইত্যাদি সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
প্রতিরোধ

অতিরিক্ত ঋতুস্রাব প্রতিরোধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, ইত্যাদির মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপের কারণে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হতে পারে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে জরায়ুর সমস্যার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে তার চিকিৎসা করা সম্ভব।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy