চুম্বন মানব-মানবীর জন্য এক শিহরণ জাগা মুহুর্ত। একখানি চুম্বনের জন্য মাঝেমধ্যেই কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে অশীতিপররাও হয়ে উঠেন দুঃসাহসী।
নিখুঁতবাদীরা বলেন, চুম্বন হতে পারে অসমবয়সী কিংবা সমকামীদের জন্যও দুর্লব মুহুর্ত। তবে চুম্বন যেমনই হোক না কেন, প্রথম চুম্বনের পর একটি প্রশ্ন দু’জন চুম্বনকারীর মধ্যে বরাবর জাগবে। আর তা হল— চোখ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কেন?
এই অনন্ত জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজতে সচেষ্ট হয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধীনে রয়্যাল হলোওয়ে প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রগাঢ় চুম্বনের সময় চোখ বন্ধ হয়ে যায় যাতে ব্রেন তার হাতের কার্যকলাপের ওপরই সম্পূর্ণ গুরুত্ব নিবন্ধ করতে পারে! দৃষ্টি এবং স্পর্শের অভিজ্ঞতার উপর হওয়া এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দৃষ্টিশক্তির উদ্দীপনার উপর জোর দিতে গিয়ে আমাদের ব্রেন অন্য ইন্দ্রিয়ের কার্যকলাপ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না!
কগনেটিভ সাইকোলজিস্ট পলি ডালটন এবং সান্ড্রা মাফি তাঁদের পর্যবেক্ষণে খুঁজে পেয়েছেন, চোখে দেখা দৃশ্যের উদ্দীপনার উপর ব্রেন ঠিক কতখানি জোর দিচ্ছে তার উপরেই নির্ভর করে স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের সজাগ থাকার বিষয়টি।
এই ধরনের গবেষণার বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজি: হিউম্যান পারসেপশন অ্যান্ড পারফরমেন্স’-এ (Journal of Experimental Psychology: Human Perception and Performance)।
গবেষকরা এই পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য একাধিক ব্যক্তিকে চোখে দেখার কাজ বা ‘ভিস্যুয়াল টাস্ক’ দেন। এই সময়ে তাঁদের স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের কার্যকলাপ কতটা ভালো ছিল তাও পরিমাপ করা হয়। এক্ষেত্রে গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কিছু অক্ষর খুঁজতে দেওয়া হয়।
তবে অক্ষর খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি বেশ কঠিন ছিল। এই অবস্থায় তাঁদের হাতে বাইরে থেকে হালকা কম্পন প্রয়োগ করা হয়।
এই বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, চোখ দিয়ে অধিক উদ্দীপনাময় দৃশ্য দেখার সময় মানুষ সত্যিসত্যিই স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের কাজ পূর্ণরূপে সম্পাদন করতে পারে না।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ আনন্দদায়ক কাজ করার সময় মানুষ চায় তার স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের প্রতিই পূর্ণ মনোনিবেশ করতে। প্রশ্ন হল তার সঙ্গে চুমু খাওয়ার সম্পর্কটা কোথায়?
ডালটন বলছেন, চুম্বন সম্পূর্ণভাবেই আনন্দদায়ক বিষয় এবং স্পর্শেন্দ্রিয়ের কাজ! তাই চুমু খাওয়ার সেই সময় চোখ বন্ধ হয়ে যায়। দর্শনেন্দ্রিয়র প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। ফলে স্পর্শেন্দ্রিয়’র সাহায্যে সুখকর অনুভূতি পেতে বাড়তি সুবিধা হয়।bs