হাতে-পায়ে মাঝে মধ্যেই ঝিঁঝি ধরে! দেখেনিন কি কি সমস্যা হতে পারে

হাত-পায়ে ঝিঁঝি অনেকেরই ধরে। সচরাচর পা কিংবা হাতের ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে থাকলে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয়, সেটাই ঝিঁঝি ধরা। এ ধরনের উপসর্গ কেতাবি ভাষায় ‘টেম্পরারি প্যারেসথেসিয়া’, ইংরেজিতে একে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ও বলা হয়। শরীরের যে অংশে ঝিঁঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন এক ধরনের অনুভূতির তৈরি হয়, যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে এক সঙ্গে ওই অংশে খোঁচানো হচ্ছে। সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মতো অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।

যেভাবে ঝিঁঝি ধরতে পারে
সাধারণত মানুষের হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে, যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝিঁঝি ধরার শঙ্কা থাকে। সাধারণত আমাদের যে ধরনের ঝিঁঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসময় ঝিঁঝি ধরার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।

বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে ‘সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস’ বা ‘লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস’ এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝিঁঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।

ঝিঁঝি কেন ধরে?
ঝিঁঝি ধরার অনুভূতিটা আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা রহস্যজনক মনে হলেও এর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনেক সহজ। আমাদের দেহের সব জায়গায় অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে। যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ওই অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ওই অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝিঁঝি ধরতে পারে।

স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ওই অংশ থেকে যেসব তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর কথা ছিল, তা বাধাগ্রস্থ হয়। একইসাথে স্নায়ুগুলোও হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পাওয়া থেকে বিরত থাকে যেহেতু রক্ত সরবরাহকারী শিরার ওপর চাপ পড়ে। এরকম পরিস্থিতি থেকে যখন চাপ অপসারিত হয়, তখন একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয় এবং একসাথে প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
দীর্ঘসময় ঝিঁঝি ধরার মতো উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ঝিঁঝি ধরার মতো উপসর্গ যদি দীর্ঘসময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝিঁঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝিঁঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।bs

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy