প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের জীবযাত্রায় বেশ পরিবর্তন হয়েছে। সেটার প্রভাব আমাদের উপর যেমন পড়ছে, তেমনি ছোট্ট শিশুদের উপরও মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে।
সন্তান শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশ শক্তিশালী হওয়া সত্তেও সহজে কিছু পড়াশুনা মনে রাখতে পারছেনা। যার কারণে অনেক পিতামাতাই বেশ উদ্বিগ্ন। কিন্তু এটি হয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের কারণে।
প্রযুক্তির কল্যাণে এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। যার কারণে মুখস্ত রাখার প্রতি একেবারেই অনীহা হয়ে পড়েছি আমরা।
এই ধরেন, ফোন নম্বর মুখস্ত রাখিনা, মনে রাখি না জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী এমনকি জরুরি বৈঠকের তারিখ৷
তার বদলে মোবাইলে অ্যালার্ম সেট করে দিই৷ রাস্তাঘাট মনে রাখার ঝামেলা থেকেও মুক্তি দিয়েছে বিভিন্ন অ্যাপ৷ মনে রাখার কোষদের গায়ে তাই মরিচা পড়েছে। কমছে কার্যকারিতা৷
শুধু যে প্রযুক্তি তা নয়, রয়েছে সঠিক খাবার না খাওয়া ও শুয়ে–বসে থাকার অভ্যাস। ফলে সমস্যা আরও বাড়ছে৷
এই বিপদ থেকে মুক্ত নয় শিশুরাও। হাজার পড়ার ভিড়, কিন্তু মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখবে এমন উপায় হাতে আসছে কই? বাজারচলতি কিছু টনিকে ভরসা করছেন অনেক অভিভাবক।
বিজ্ঞানীরা স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে বেশ কয়েকটি খাবারের পরামর্শ দিয়েছেন। যা নিয়ম করে খেলে ও একটু শরীরচর্চা করলে মনে রাখার ক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে আপনার সন্তানের মেধা আরও বেশি শার্প থাকবে।
স্মৃতি বাড়ানোর খাবার
নিউরোসায়েন্সে প্রকাশিত এক স্টাডিতে দেখানো হয়েছে, যে সমস্ত মোটা মানুষ ছ’মাস ধরে রেসভারেট্রল সাপ্লিমেন্ট খেয়েছেন, বড় তালিকায় লেখা নাম তারা আধ ঘণ্ঢা পরেও বেশ মনে রাখতে পেরেছেন৷
আর যারা খাননি তারা সেভাবে পারেননি৷ রেসভারেট্রল প্রচুর পরিমাণে থাকে ডার্ক চকোলেটে৷ এবং এর আসল কাজ বয়স ধরে রাখা৷ তার পাশাপাশি মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতেও তার জুড়ি নেই৷
এই একই কাজের কাজি ডিএইচএ নামে ওমেগা–থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড৷ তৈলাক্ত মাছে যা আছে ভরপুর৷ ফল–শাক–সব্জির অ্যান্টিক্সিড্যান্টও কম যায় না৷
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন বয়স হলে মস্তিষ্কের তথ্য পরিচালন করার ক্ষমতা যে কমতে থাকে, তার গতিবেগ থামাতে ও স্মৃতি বাড়াতে এই সব প্রাকৃতিক খাদ্য খুবই কার্যকর৷ কার্যকর গ্রিন টি–র অ্যান্টিক্সিড্যান্টও৷
স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে, তাহলে সারা দিনের রুটিনে কী কী রাখতে পারলেই পড়াশোনা থেকে জরুরি তথ্য থেকে যাবে মাথায়? রইল তারই কিছু তথ্য।
দিনে ২–৩ বার দুধ–চিনি ছাড়া গ্রিন টি খান৷ মনে রাখার ক্ষমতা বাড়বে, বয়স ধরে রাখা সহজ হবে৷
দিনে বার দুয়েক টাটকা ফল খান৷
স্ন্যাক্স হিসেবে খান ৪–৫টা করে অ্যামন্ড, আখরোট, কিসমিস৷
দুপুরে খান মাছ ও টাটকা শাক–সব্জি৷ রাত্রেও তাই৷ চিকেনও চলতেই পারে।
মাঝে মাঝে খান ডার্ক চকোলেট৷
ডাক্তারের পরামর্শমতো রেসভারেট্রল সাপলিমেন্টও খেতে পারেন৷
খোলা জায়গায় মর্নিং ওয়াক করুন৷ সাঁতার বা জগিংয়েও ফল পাবেন৷
ডিপ ব্রিদিং, যোগা ও মেডিটেশন করে মন শান্ত রাখুন৷bs