দুধ থেকে তৈরি খাবার পনিরে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন থাকে বলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। পনির হৃদরোগ, ক্যানসার প্রতিরোধ করা, হাড় ও দাঁত মজবুত রাখা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সহ শরীরের অনেক উপকার করে।
ঠিক কবে থেকে পনির তৈরির কাজটা শুরু হয়, তা জানা না গেলেও প্রায় ৮-১০ হাজার বছর আগে থেকে মানুষ পনির খেয়ে আসছে বলেই জানা যায়। গ্রিক পুরাণে যেমন পনিরের কথা বলা আছে, তেমনি মিশরের প্রাচীন ম্যুরালে পনির তৈরির বিষয়টাও দেখা যায়। রোমান সাম্রাজ্যে, বিশেষ করে জুলিয়াস সিজারের শাসনামলে কয়েক ধরনের পনির তৈরি হতো বলে জানা গেছে।
বর্তমানে যেসব পনির বাজারে বেশি দেখা যায় সেগুলো হলো- চ্যাডার, মোজারেলা, পারমেসান, আসিয়াগো, বেবিবেল, ফেটা, মন্টেরে জ্যাক, গ্রুয়েরে, প্রভোলোন, গোউডা, রিকোটা, সালাটা।
পনির যে কারণে উপকারি
প্রচুর প্রোটিন থাকে :
পনিরে প্রচুর প্রোটিন থাকে, যা সহজে হজম হয়। শরীরের জন্য প্রোটিন খুব জরুরি। পনির তাই শরীর গঠনে ও শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। যারা নিরামিষভোজী, তাদের প্রোটিন চাহিদার বিকল্প এই পনির।
কার্বোহাইড্রেট থাকে :
শরীরের জ্বালানী কার্বোহাইড্রেট। শক্তি উৎপাদন ও শরীর সচল রাখতে কার্বোহাইড্রেট খুব প্রয়োজন। পনিরে যে কার্বোহাইড্রেট থাকে, তা গ্লুকোজ ও চিনিতে পরিণত হয়। তবে কোন ধরনের পনির আপনি খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ।
উপকারি ফ্যাট :
পনিরে শরীরের জন্য উপকারি ফ্যাট থাকে। তাই প্রতিদিন পরিমাণ মতো পনির খেলে শরীর সুস্থ থাকে।
মজবুত হাড়ের জন্য :
পনিরে ক্যালসিয়াম থাকে প্রচুর। অনেক ধরনের পনিরে ভিটামিন বি ও বি কমপ্লেক্স থাকে। তাই মজবুত হাড় তৈরিতে পনির ভালো ভূমিকা রাখে। ক্যালসিয়াম ও মিনারেল বেশি থাকায় বাড়ন্ত শিশুদের জন্য পনির খুব উপকারি।
হৃৎপিন্ড ভালো রাখে :
পনির হৃৎপিন্ডকে ভালো রাখে। এতে থাকা উপকারি ফ্যাট, পটাশিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখে। অবশ্য সব সময় পরিমিত পনির খাওয়ার পরই উপকার পাওয়া যাবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে :
পনিরে লাইনোলিক এসিড ও স্ফিনজোলিপিড থাকে প্রচুর, যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। পনির কোলন ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে :
নিয়মিত পনির ও দুগ্ধজাত খাবার খেলে হাড়ের জটিল রোগ অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করা যায়, বলছেন গবেষকরা।
সুস্থ দাঁতের জন্য :
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বেশি থাকায় পনির দাঁত মজবুত রাখে।
মানসিক চাপ কমায় :
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে পনির ভালো ভূমিকা রাখে জানা গেছে। এতে ম্যাগনেশিয়াম থাকায় অল্প পরিমাণে পনিরও আপনাকে ফুরফুরে মেজাজ দেবে।
মস্তিষ্ক সতেজ রাখে :
পনিরে ওমেগা থ্রি ও সিক্স ফ্যাটি এসিড থাকে প্রচুর। তাই মস্তিষ্ক সতেজ রাখতে ভালো ভূমিকা রাখে এটি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে :
কয়েক ধরনের পনিরে জিংক থাকে প্রচুর, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পনিরে থাকা উপকারি ব্যাকটেরিয়া হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়, যাতে পুরো স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
তবে শরীরের জন্য উপকারি এই পনিরের যথাযথ উপকারিতা পেতে পরিমিত পরিমাণেই তা খাওয়ার পরামর্শ দেন গবেষকরা।