অনেকেই সুযোগ পেলেই নখ মুখে পুরে কামড়াতে থাকেন। বিরক্তি ভাব, একঘেয়েমি, মানসিক উদ্বেগ বা খুব মনোযোগী হয়ে কাজ করার সময় অজান্তেই নখ দাঁতের কাছে চলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস সাময়িকভাবে তৃপ্তি দিলেও শরীরের জন্য তা একেবারেই ভালো নয়।
বয়স নির্বিশেষে দাঁত দিয়ে নখ কাটার বদভ্যাস অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ওনিকোফেজিয়া। এটি একটি মানসিক সমস্যা। ছোটবেলা থেকে শুরু হওয়া এই বদভ্যাস বড় হয়েও অনেকেই ছাড়তে পারেন না।
দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন-
১. হাতের নখে সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে ব্যাকটেরিয়া মুখে চলে যায়। এর ফলে পেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
২. শিশুদের মধ্যে দাঁত দিয়ে নখ খাওয়ার অভ্যাস বেশি করে দেখা যায়। এতে দাঁতের গঠন নষ্ট হয়ে যায়। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুর এ অভ্যাস ছাড়ানোর দায়িত্ব বর্তায় পরিবারের উপর।
৩. দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে নখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। দাঁত তীক্ষ্ণতায় অনেক সময় নখের চারপাশের চামড়া কেটে গিয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যা এক সময় চর্মরোগে পরিণত হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা এই বদভ্যাস পরিত্যাগ করতে বলেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস রোধ করবেন-
৪. নখ বড় থাকলে তা দাঁত দিয়ে কাটতে ইচ্ছে করবে। তাই সব সময় নখ ছোট করে রাখুন। আর বড় নখে ময়লাও বেশি জমে। তাই নখ ছোট রাখাই ভালো।
৫. আরেকটি উপায় হলো নখে নেলপালিশের ব্যবহার। তাহলে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে গেলেই নেলপালিশের তিক্ত স্বাদ ও গন্ধ ওই কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
৬. নখের সৌন্দর্যতা বাড়াতে মাঝে মধ্যে ম্যানিকিওর করান। এর ফলে নখ আর কাটতে ইচ্ছে করবে না। তাই নখ মুখের কাছে গেলেও তা ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
৭. অন্যমনস্কতা দূর করুন। যে কোনো কাজেই পুরোপুরি মনোযোগী হন। কারণ অমনোযোগী থাকলে দাঁত দিয়ে নখ কাটার মতো বদভ্যাসের জন্ম হয়। তাই সব কাজেই সচেতন থাকুন।
৮. দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস তৈরির পেছনে আরও একটি কারণ হলো মানসিক চাপ বা উদ্বেগ। ফলে অনেকেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে অতিরিক্ত নখ কাটেন দাঁত দিয়ে। তাই মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, প্রাণায়াম, যোগাসন করুন। পারলে নিয়মিত শরীরচর্চাও করুন। এতে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।