আর নয় চুল পড়ার দুশ্চিন্তা? সহজ ঘরোয়া সমাধান হাতের মুঠোয়

আজকে আমরা আলোচনা করবো খুবই গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয় ও সমস্যা নিয়ে এবং যার নাম হচ্ছে চুল পড়া সমস্যা বা হেয়ার ফল প্রব্লেম । এই হেয়ার ফল থেকে মুক্তি পাবার কিছু কার্যকরী উপায় ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।

প্রথমে কিছু কথা :

সুন্দর, ঘনো, কালো মজবুত চুল আমারা কে না চাই? সবারই পছন্দ সুন্দর ও ঘনো চুল।কেননা চুলেই মেয়েদের সবচেয়ে বেশি সুন্দর্য ফুটে ওঠে। আর তাই সবসময় নিজেকে সুন্দরভাবে ও পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখতে সবাই আমরা সুন্দর, ঘনো ও মজবুত চুল আশা করি। তবে, একটি বিশেষ সমস্যার জন্য হয়তো তা সম্ভব হয়ে উঠে না অনেকেরই ক্ষেত্রে।

বর্তমানে আমাদের সকলেরই কম বা বেশি হেয়ার ফল এর সমস্যা রয়েছে । সাধারণত, বিভিন্ন কারনে এই হেয়ার ফল সমস্যাটি বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের ও এই সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যাটি সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় বয়সন্ধিকালের ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে।কিন্তু, বয়সন্ধিকালে এই সমস্যাটি ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যেই বেশি লক্ষ্য করা যায়।

এই সমস্যা হওয়ার কিছু বিশেষ কারন :

১. চুল ময়লা ও অপরিষ্কার থাকার জন্য।

২. চুলের গোড়াতে ধুলিকনা জমে থাকলে।

৩. ভিজা চুল ঘনো ঘনো আঁচড়ালে।

৪. চুলে নিয়মিত ইলেকট্রনিক হিটার বা আইরন ব্যবহার করলে।

৫. চুলে বিভিন্ন মেডিসিন বা হেয়ার কালার ঘন ঘন ব্যবহার করলে।

উপরিউক্ত কারনগুলোর জন্য হেয়ার ফল প্রব্লেম টি দেখা দেয়। তবে, সমস্যা যতোটাই জটিল হোক না কেনো, সমাধান অবশ্যই আছে।কিছু বিধিনিষেধ ও চুলের পরিচর্যা অনুসরণ করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব হিবে। নিম্নে কিছু বিধিনিষেধ ও চুলের যত্ন নেওয়ার বিষয় উল্লেখ করা হল :

বিধিনিষেধ গুলো :

১. ভিজে অবস্থায় চুল আঁচড়ানো যাবে না।

২. চুল শুকানোরর ক্ষেত্রে সর্বদা প্রাকৃতিক নিয়ম প্রয়োগ করা, কোনো হিটার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।

৩. চুলে সর্বদা যেকোনো ১ টি ব্রেন্ডের শ্যম্পু ব্যবহার করা। ঘনো ঘনো ব্রেন্ড পরিবর্তন না করা।

যারা চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন তারা উপরিউক্ত বিধিনিষেধ গুলো অবশ্যই মেনে চলবেন। বিধিনিষেধ গুলো মেনে চললে আশা রাখি এই সমস্যার থেকে খুব শিঘ্রই মুক্তি পাবেন।

চুলের যত্ন ও পরিচর্যা :

১. চুলে সপ্তাহে অন্তত ৩ – ৪ দিন তেল দেওয়া।

২. প্রতিদিন শ্যম্পু করা থেকে বিরত থাকা। সপ্তাহে ৩ দিনের বেশি শ্যম্পু না করাই ভালো।

৩. চুলে মেথি, মেহেদি, টক দই এর পেস্ট বানিয়ে তা মাসে অন্তত চুলে ২ বার ব্যবহার করা। এতে চুল উজ্জ্বল, প্রানবন্ত ও ঝলমলে হবে।

দেহ সুস্থ্য রাখা ও পুষ্টিসম্পন্ন রাখার জন্য যেমন খাদ্যের দরকার ঠিক তেমনি চুলের পরিচর্যার জন্য ও দরকার হয় খাদ্য। আর চুলের প্রধান খাদ্য হচ্ছে তেল ও ভিটামিন তেল। ভিটামিন তেল বলতে ভিটামিন ই তেল বা ক্যপ্সুল। তেলের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ব্রান্ডের ভিন্ন ভিন্ন তেল রয়েছে। অনেকেই বলে থাকেন যে চুলে নিয়মিত তেল দেওয়ার পরেও চুল মজবুত না,চুল ঝলমলে তো দূর বরং চুল পড়ছে। তাহলে তাদের জন্য একটাই কথা চুলের প্রধান খাদ্য অর্থাৎ চুলে তেল দেওয়ার ও কিছু সঠিক নিয়ম রয়েছে। অবশ্যই নিয়ম মেনেই চুলে তেল দিতে হবে নাহলে আশানুরূপ ফলাফল আশা করা যায় না। নিম্নে চুলে তেল দেওয়ার সঠিক নিয়মাবলী দেওয়া হলো :

১. তেল দেওয়ার সঠিক নিয়ম ও পরিচর্যা :

তেল দেয়ারও কিছু নিয়ম আছে, যেমন : তেল অবশ্যই চুল এবং স্কাল্পের মধ্যে সামঞ্জস্য করে দিতে হবে। তেলের ৭০ভাগটাই স্কাল্পে ভালোভাবে দিতে হবে এবং বাকি ৩০ভাগ চুলে দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশির ভাগ তেল চুলে না লেগে যায়। তেল অবশ্যই স্কাল্পেই প্রয়োগ করতে হবে। যদি বেশিরভাগ তেল চুলে লেগে যায় তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না।

২. সঠিক নিয়মে হট অয়েল মাসাজ :

চুলের সাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সাপ্তাহে অন্তত ১দিন হট অয়েল মাসাজ দিন।

তবে সেটা অবশ্যই সঠিক নিয়মে দিতে হবে। অনেকে এটাও বলেছেন যে, হট অয়েল মাসাজের পরেও চুলের সাস্থ্যের কোনো উন্নতি দেখছেন না, কারন ১টাই সঠিক নিয়ম অবলম্বন না করা।

আপনারা অনেকেই হট অয়েল মাসাজ করার পর চুল বেধে রাখেন, শ্যাম্পু করে ফেলেন। কিন্তু এটা সঠিক নিয়ম না, সঠিক নিয়ম হল : হট অয়েল মাসাজ করার পর চুল অবশ্যই গরম তাওয়াল দিয়ে পেঁচিয়ে রাখতে হবে। তেল দেয়ার অন্তত ৩ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে।

উপরিউক্ত নিয়মাবলীগুলো মেনে চললে খুব সহজেই হেয়ার ফল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বা আমরা নিজেদের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ও এই চুল পড়া সমস্যা মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারবো।

বিশেষ কিছু মানুষের মধ্যে চুল পড়ার প্রবনতা মারাত্মক।তাদের অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন কররে হবে এবং চিকিৎসক এর পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

আশা করছি আমার লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং ভালো উপকার পাবেন। আপনাদের দোয়ায় আজকে বিদায় নিচ্ছি। তবে আবারো কথা হবে ভিন্ন কিছু সমস্যা এবং তার প্রতিকার নিয়ে। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।bs

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy