প্রসাধন সামগ্রী এখন শুধু রূপটানে আটকে নেই। নানা নিত্য প্রয়োজনীয় প্রসাধনী হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ।
আর এই চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজার ছেয়ে গেছে নানান সংস্থার নানান ধরনের ক্রিম, লোশন কিংবা সাবানে।
কিন্তু এ ধরনের প্রসাধনীতে থাকতে পারে এমন কিছু উপাদান যা অজান্তেই বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। প্রসাধনীর যেসব উপাদান বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে তা হল :
ফ্যালেট
এই ধরনের রাসায়নিক পদার্থ প্লাস্টিক উৎপাদনেও ব্যবহৃত হয়। মানবদেহে এর রাসায়নিকের প্রভাব অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। ফ্যালেট মানবদেহের বিভিন্ন গ্রন্থির ক্ষরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যাতে বিগড়ে যেতে পারে হরমোনের ভারসাম্য। পাশাপাশি এই ধরনের পদার্থ ডেকে আনতে পারে ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিও। মূলত নেলপালিশ, চুলের স্প্রে ও মুখে মাখার ক্রিমে এই পদার্থটি ব্যবহৃত হয়।
টলুইন
টলুইন একটি পেট্রোকেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ। সাধারণত নেলপালিশ তোলার জন্য যে থিনার ব্যবহার করা হয়, তাতেই থাকে এই রাসায়নিক পদার্থটি। লিভারের জন্য এই পদার্থটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই রাসায়নিক পদার্থটি ডেকে আনতে পারে মস্তিষ্কের সমস্যাও।
পলিইথিলিন
যে সকল চুলের রং ও রূপটানের সামগ্রী আর্দ্র ঘন ক্রিমের মতো হয়, সেই সব প্রসাধনীতে সাধারণত এই উপাদানটি থাকে। এই সব প্রসাধনীতে থাকা উপাদানগুলি যাতে খুব সহজেই ত্বকের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে তাই তার সঙ্গে পলিথিলিন জাতীয় পদার্থ মিশিয়ে দেয়া হয়।
এই রাসায়নিকের প্রভাবে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা ছাড়া এই ধরনের পদার্থ ক্যানসার ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ডেকে আনতে পারে। কাজেই দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
কার্বন ব্ল্যাক
সাধারণত কাজল ও অন্যান্য কালো রঙের প্রসাধনীতে যে কালচে রং থাকে, তা উৎপন্ন হয় কার্বন ব্ল্যাক বা সমতুল্য কোনও পদার্থ থেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কার্বন ব্ল্যাক উপেক্ষা করে চলাই ভাল। বিশেষত চোখের ক্ষেত্রে কার্বন ব্ল্যাক যুক্ত পদার্থের ব্যবহার অনেক। কারণ এতে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি একাধিক অঙ্গে বিষক্রিয়া হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
ভারী ধাতু
দস্তা, পারদ, আর্সেনিক, অ্যান্টিমনি, জিঙ্ক কিংবা ক্রোমিয়ামের মতো ধাতুগুলি বহু প্রসাধন সামগ্রীতেই দেখা যায়। বিশেষত লিপস্টিক, দাঁত সাদা করার পদার্থ, আইলাইনার, নেলপলিশ ও ডিওডেরান্টে এই ধরনের ধাতু ব্যবহার করা হয়।
এই ধাতুগুলি শরীরে তীব্র বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। লিভারের অসুখের পাশাপাশি এই ধাতুগুলি অবাঞ্ছিত গর্ভপাত ও বন্ধ্যত্ব ডেকে আনতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিতে ঘটতে পারে বিলম্ব। এমনকি এই ধাতুগুলি কাজ করতে পারে নিউরোটক্সিন হিসেবেও।
TS