প্রতিটি মানুষের খাদ্যাভাস আলাদা। প্রত্যেককে তার নিজস্ব সহনশীল খাবার খেতে হবে। কুসংস্কার না মেনে প্রত্যেকের প্রতিটি খাবার, যা তার নিজের জন্য সহনশীল—তা খাওয়া উচিত।
অনেকেই ফল খেয়ে জল খান না, কেউ আবার রাতের বেলায় শাক খান না। এসব বিষয় কি আদৌ ঠিক, কীভাবেই বা এমন ধারণা চালু হলো? এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা কী বলেন। জেনে নিন এ প্রতিবেদনে।
১. পেট ভরে ভাত নয়
দুপুরে পেট ভরে ভাত খাওয়াটা ঠিক নয়। সকালে ভারী খাবার খেতে হবে। কেননা, এর পরে আমরা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। দুপুরের দিকে হালকা খাবার খেতে হবে। আর রাতের বেলায় মাঝামাঝি খাবার খেতে হবে। রাতের বেলায় সাধারণত ঘুমানোর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে খাবার খেতে হবে।
২. খাওয়ার পর শোয়া নয়
ভারী খাবার খেয়ে অনেকে শুয়ে থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু এটা কখনো ঠিক নয়। ভারী খাবার খেয়ে কখনো শুয়ে-বসে কাটানো যাবে না। বরং হাঁটাচলা করতে হবে।
৩. খাওয়ার পরপরই হাঁটা নয়
আমরা অনেক সময় ব্যায়াম করার ঠিক আগে খাই বা খেয়ে উঠেই হাঁটাহাঁটি শুরু করি। কিন্তু যেকোনো বেলায়ই খাবার খাওয়ার পরপরই হাঁটা ঠিক নয়।
৪. ফলের পরে জল নয়
ফল খাওয়ার পরে জল খাওয়া উচিত নয়। কারণ, ফল খাওয়ার পর এটা হজম হতে সময় লাগে। আর হজমে যেন অসুবিধা না হয়, সে জন্য যেকোনো ফল খাওয়ার পর জল না খাওয়াটা ভালো।
৫. ভরপেটে চা নয়
সকালের খাবারের পরই চা পান করা ঠিক নয়। ভরপেট সকালের নাশতা খাওয়ার পরে চা খেলে কিডনিতে সমস্যা হয়। নাশতা খাবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর চা পান করা উচিত।
৬. ইসুবগুলের ভুসি অনেক্ষণ ভিজিয়ে নয়
ঘুমানোর আগে আমরা অনেকে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে থাকি। ইসুবগুলের ভুসি রাতের খাবারের পরে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে না রেখে জল দিয়ে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলতে হবে।
৭. গ্যাস্ট্রিকে দুধ নয়
গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হলে আগের দিনে বলা হতো সারাক্ষণ দুধ খেলে পেটের জ্বালাপোড়া চলে যায়। কিন্তু এ কথাটা একেবারে ঠিক নয়। এখনকার সময়ে চিকিৎসকেরা বলেন গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হলে সারাক্ষণ দুধ খেলে তা ঠিকমতো হজম হয় না, ফলে অ্যাসিডিটি বাড়ে।
৮. খাওয়ার মাঝে জল নয়
খাবার খেতে খেতে বেশি জল খেলে হজমে সমস্যা হয়। খাওয়ার মাঝে বেশি জল খেলে ঠিকমতো খাবার হজম হয় না। তাই খাবার মাঝে জল না খেয়ে খাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট পর জল খান।
৯. নয়টার পরে নাশতা নয়
সকালের নাশতা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কেননা সকালবেলাতেই আমাদের বিপাকক্রিয়া শুরু হয়, হরমোনের মাত্রাও এ সময় বেশি থাকে। সকালের নাশতার আদর্শ সময় শুরু হয় সাতটা থেকে। ভালো হয় যদি নয়টার মধ্যে সেরে ফেলা যায়।
১০. একটার পর লাঞ্চ নয়
দুপুরে খাওয়ার সঠিক সময় সাড়ে ১২টা থেকে ১টা। সকাল ও দুপুরের খাবারের মধ্যে একটা হালকা নাশতা নিতে পারেন। সকালের নাশতা মোটামুটি পেট ভরে খেলে দুপুরের খাবারটা মাঝারি পরিমাণের হওয়া উচিত।
১১. নয়টার পরে ডিনার নয়
সবচেয়ে ভালো হয় যদি রাতের খাবার সাতটার মধ্যে সেরে ফেলা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, দেরি করে রাতের খাবার গ্রহণের সঙ্গে শরীরের ওজন বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। কোনো কারণে এই সময়ের মধ্যে সম্ভব না হলে অন্তত ঘুমানোর ঘণ্টা তিনেক আগে রাতের খাবার সেরে ফেলুন। এ সময় হালকা খাবারই ভালো।bs