গ্রামগঞ্জে যত্রতত্র দেখা যায় কলমিশাক। তবে শহর এলাকায় এই শাকের দাষ হয়। দামে শস্তা কিন্তু পুষ্টিতে ভরা। অনেক ক্ষেত্রে থানকুনি, কচু ও পুঁইশাকের চেয়েও এর পুষ্টিগুণ বেশি। স্বাদেও ভালো এই শাক। কলমিশাকের ভাজি অথবা ঝোল রান্নার প্রচলন রয়েছে।
কলমিশাক আঁশজাতীয় একটি খাবার। এই শাকের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লোহা ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
১০০ গ্রাম কলমিশাকে রয়েছে- আমিষ ১ দশমিক ৮ গ্রাম, শর্করা ৯ দশমিক ৪ গ্রাম, ভিটামিন বি-১ শূন্য দশমিক ১৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ অর্থাৎ রিবোফ্লোবিন শূন্য দশমিক ৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৪২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম, লোহা ৩ দশমিক ৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১০ হাজার ৭৪০ মাইক্রোগ্রাম ও খাদ্যশক্তি ৪৬ কিলোক্যালরি।
কলমিশাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এর রয়েছে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা। নিয়মিত কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়। এছাড়া অন্য যেসব উপকারে আসে এই কলমিশাক :
হাড় ও দাঁত মজবুত করে
কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের কলমিশাক খাওয়ালে তাদের আর বাজারের প্রচলিত চটকদার ফুড সাপ্লিমেন্টের দরকার হয় না।
চোখ ভালো রাখে
কলমিশাক চোখের জন্য বিশেষ উপকারী। এতে অধিক পরিমাণে ক্যারোটিন রয়েছে। এ ক্যারোটিন থেকে আমাদের দেহে ভিটামিন-এ তৈরি হয়। যা দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।
রোগ প্রতিরোধক
কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। এর ভিটামিন বি-১ স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
শারীরিক দুর্বলতা কাটায়
কলমিশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যশক্তি থাকায় শারীরিক দুর্বলতা দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। রোগীদেরকে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য তাই কলমিশাক খাওয়ানো যায়।
হজম সহায়ক
কলমিশাক মূলত আঁশ জাতীয় খাবার। এই আঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। তাই নিয়মিত কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
রক্তশূন্যতা দূর করে
কলমিশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ থাকায় রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী। শরীরে প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখতেও এই শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মহিলাদের শারীরিক সমস্যায়
মহিলাদের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় সমস্যায় দ্রুত কাজ করে কলমিশাক। জন্মের পর শিশু মায়ের বুকের দুধ না পেলে মাকে কলমিশাক রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাবে।
তবে যাদের ইউরিক এসিডের সমস্যা এবং কিডনি সমস্যা আছে, তারা কলমিশাক খাবেন না।bs