অন্ত্রের ক্যানসারকে কোলন বা রেকটাল ক্যানসারও বলা হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য অন্ত্রের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ। এমনকি দুর্বল বা অনুপযুক্ত টয়লেটের অভ্যাসও এই ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
গবেষণায় জানা গেছে, হাই কমোডে অন্ত্র খালি করতে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্ত্রের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অন্যদিকে লো কমোডে স্কোয়াটের মাধ্যমে মলত্যাগের অভ্যাস অন্ত্রের ক্যানসারসহ কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায়।
স্কোয়াটিং হলো মলত্যাগের জন্য একটি প্রাকৃতিক অবস্থান। এক্ষেত্রে মলত্যাগের সময় বেশি চাপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অন্যদিকে হাই কমোড বা টয়লেট সিটে বসলে মলত্যাগে অসুবিধা হয়।
সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। যা কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস এমনকি অন্ত্রের ক্যানসারেরও কারণ হতে পারে।
অন্ত্রের ক্যানসারের অন্যান্য কারণ কী কী?
অন্ত্রের ক্যানসারের সঠিক কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। তবে এমন অনেকগুলো বিষয় আছে যা এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এরকম একটি ফ্যাক্টর হলো বয়স। অন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৯ জনের বয়স ৬০ বা তার বেশি।
আরেকটি ঝুঁকির কারণ হলো খ্যাদ্যাভ্যাস। লাল বা প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি ও ফাইবার কম এমন খাদ্য নিয়মিত খেলে এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
এছাড়া অতিরিক্ত ওজন, শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা, অ্যালকোহল পান ও ধূমপান অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। পরিবারে কারও এই রোগ থাকলে আপনারও হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
অন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়
অন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধ করতে হলে সবার আগে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে হবে। এজন্য অবশ্যই বাড়িতে রান্না করা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া যাবে না।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন প্রচুর জল পান করুন।
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কিউই ফল খেতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম অন্ত্রের ট্রানজিট সময়কে উদ্দীপিত করতেও সাহায্য করতে পারে।
কিছু গবেষণায় গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, দৌড়বিদদের মধ্যে অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কম। তাই নিয়মিত দৌঁড়ান কিছুক্ষণ।
অন্ত্রের ক্যানসারের লক্ষণ কী কী?
অন্ত্রের ক্যানসারের প্রথম লক্ষণগুলেঅর মধ্যে একটি হলো মলত্যাগে পরিবর্তন। এনএইচএস ইউকে অনুসারে, অন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত ৯০ শতাংশেরও বেশি রোগী তাদের মলত্যাগে পরিবর্তন অনুভব করেন।
এমনকি ঘন ঘন মলত্যাগ করা, মলত্যাগে ক্রমাগত রক্ত পড়া, তলপেটে ব্যথা, ফোলাভাব বা অস্বস্তি ইত্যাদি লক্ষণও অন্ত্রের ক্যানসারের কারণে হতে পারে।
এর পাশাপাশি ক্ষুধামন্দা ও হঠাৎ ওজনও কমে যেতে পারে। এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।bs