শিখেনিন কিভাবে পছন্দ মতো খাওয়া-দাওয়া করে ওজন কমাবেন?

আমাদের অনেকেই ডায়েট বলতে বুঝি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা। ওজন কমাতে গেলে খাবার বন্ধ নয়, বরং সব খাবার পরিমাণ মতো খাওয়াটাই সঠিক কৌশল। তাই আর অপেক্ষা নয়, চটজলদি দেখে নিন কিভাবে পছন্দ মতো খাওয়া-দাওয়া করেও দিব্যি ওজন কমাতে পারবেন!

১. প্রোটিন, আঁশ এবং উপকারী চর্বি খেতে হবে
সকালের নাশতা থেকে দুপুরের খাবার, এমনকি রাতের খাবারেও খেতে হবে প্রোটিন, আঁশ এবং উপকারী চর্বি সমৃদ্ধ খাবার। যেমন- ডাল, নানা ধরণের বীজ জাতীয় খাদ্যশস্য ইত্যাদি। কারণ এমন ধরনের খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। আবার অ্যাভোকাডো, বাদাম এবং নানাবিধ বীজকেও রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এমন ধরনের খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসম্মত চর্বি পাওয়া যায় অলিভ অয়েলের মধ্যে। এই উপাদানগুলি ঠিক ঠিক মতো শরীরে প্রবেশ করলে ওজন যেমন আয়ত্তের মধ্যে থাকে, তেমনই হাজারো রোগ শরীর থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়।

২. সবজি খান নিয়মিত
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবজি আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কাজে আসে। কারণ সব্জির মধ্যে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে, আর খাওয়ার পর অনেকক্ষণ পেট ভরা তাকে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমে। ফলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার কারণে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। এই কারণেই দিনের প্রতিটি খাবারের সঙ্গে সবজিকে রাখতে ভুলবেন না। এমনকি সুযোগ থাকলে সকালের নাশতায়ও অল্প করে সবজি খেতে পারেন।

৩. খেতে হবে নিয়ম মেনে
নিয়ম মেনে পরিমাণ মতো খান। সকাল বেলায় ভারি খাবারের সঙ্গে ফল, বাদাম, মাখন ইত্যাদিও খেতে পারেন। কিন্তু রাতে খেতে হবে একেবারে অল্প পরিমাণে। কারণ সূর্য ডুবে যাওয়ার পর আমাদের মেটাবলিজম রেট একেবারে কমে যায়। তাই তো ডিনারে বেশি মাত্রায় খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

৪. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
দিনে কম করে ৬০ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এমন ধরণের ব্যায়াম করুন যাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ঝরতে পারে। তবে সপ্তাহে পাঁচদিনের বেশি ব্যায়াম করবেন না যেন। কারণ শরীর যাতে ঠিক মতো বিশ্রাম পায়, সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত।

৫. দিনে ৩০ গ্রাম করে আঁশ খান
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আঁশসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলে দেখবেন বেশি পরিমাণে খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি প্রবেশর পথ বন্ধ হবে। সেই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে।

৬. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমোতে হবে
অফিসের চাপ, সময় মতো কাজ শেষ করা- সব কিছুর চিন্তায় কিছুতেই ঘুম আসে না? এমনটা হলে কিন্তু শরীর ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে। আসলে ঠিক মতো না ঘুমালে খাওয়ার ইচ্ছাও চলে যায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, ঘুম ঠিক মতো না হলে বছরে প্রায় দেড় কেজি করে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

৭. জল খেতে হবে ঠিক মতো
বেশি খাবার খেলে যেমন ওজন বাড়ে, তেমন বেশি পরিমাণে জল পান করলে ওজন কমে। তাই তো দিনে কম করে ৩-৪ লিটার জল পান করতেই হবে। সেই সঙ্গে যে সমস্ত খাদ্যে জলের পরিমাণ বেশি রয়েছে এমন ফল এবং সবজি বেশি করে খেতে হবে। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে ঠাণ্ডা জল খেলে, আমাদের মধ্যে উৎসেচকের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে খাবার খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। তবে ফ্রিজের ঠাণ্ডা জল বা সোডা একদমই খাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হয় কিন্তু।

৮. সপ্তাহে একদিন যা খুশি খান
ওজন কমানোর জন্য পছন্দের কোনও খাবারকে একেবারে বাদ দিয়ে দেবেন না যেন! বরং সপ্তাহে একদিন মনের মতো খাবার খেতেই পারেন। কিন্তু সেসব খাবার খাবেন অল্প পরিমাণে। একেবারে বেশি মাত্রায় খেয়ে নেবেন না যেন!

৯. কোনো সময়ই পেট ভরে খাবেন না
আমরা অনেকেই আছি যারা খেতে ভালবাসি বলে ঠেসে খেয়ে নিই। এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এতে হজমের যেমন সমস্যা হয়, তেমনই ওজনও বেড়ে যায়। তাই স্বাভাবিক মাত্রায় খাবেন। কষ্ট করে বেশি করে খেতে যাবেন তো বিপদ!

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy