শারীরিক ঘনিষ্ঠতা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে আরো মধুর করতে খুব জরুরি। এই সম্পর্ক দু’টি মানুষের সম্পর্কের রসায়নকে দৃঢ় করে। অন্যান্য চাহিদার মতো এটিও মানুষের একটি স্বাভাবিক চাহিদা।
তবে অনেকসময় দেখা যায়, দম্পতিদের মধ্যে সঙ্গমের ইচ্ছা কমে যায়। এই বিষয়টি মোটেও অবহেলার নয়। কারণ এই অনিচ্ছা মারাত্মক কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। জানলে অবাক হবেন যে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার যৌন জীবনেই গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে ডায়াবেটিস।
বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিস যৌন মিলনের ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। হ্রাস করে শারীরিক সক্ষমতাও। ডায়াবেটিসের প্রভাবে বিঘ্নিত হয় হরমোন নিঃসরণ, যা শারীরিক ও মানসিক দু’দিক থেকেই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি অনেক সময়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেতে বাধ্য হন রোগীরা। এই ওষুধের পরোক্ষ প্রভাবেও কমতে পারে যৌন আকাঙ্খা।
ডায়াবেটিসের আক্রমণে দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস ঘটিত নিউরোপ্যাথি। ডায়াবেটিসের প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হলে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। এই রোগের প্রভাবে যৌনাঙ্গে ব্যথা ও অসাড়তার মতো সমস্যা দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে রোগীরা যৌনাঙ্গের অনুভূতি হারিয়ে ফেলেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে লিঙ্গ শিথিলতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী কোনো না কোনো সময়ে লিঙ্গ শিথিলতায় আক্রান্ত হন। স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও ডায়াবেটিস ঘটিত সংবহনতন্ত্রের সমস্যাও এর অন্যতম কারণ। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আবশ্যক কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে কিছু ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ বিঘ্নিত হতে পারে, যা কারণ হতে পারে লিঙ্গ শিথিলতার।
পশ্চাদমুখী বীর্যপাতও ডায়াবেটিস রোগীদের আরো একটি বড় সমস্যা। এই রোগে লিঙ্গের বদলে মূত্রাশয়ে বীর্য প্রবেশ করে। অভ্যন্তরীণ স্ফিঙ্কটর পেশীর কার্য ক্ষমতা হ্রাসই এই সমস্যার কারণ। রক্তে শর্করার পরিমাণের তারতম্যের ফলে এই পেশী নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলেই এরূপ সমস্যা সৃষ্টি হয়।
শুধু পুরুষরাই নন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীরাও একইভাবে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। মধুমেহর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি নারী দেহে দেখা যায়, তা হলো যোনিদেশের শুষ্কতা। হরমোনের তারতম্য ও রক্ত সঞ্চালনের সমস্যাই এর মূল কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিসের আক্রমণে নারীদের যোনির প্রদাহ ও সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউটিআই-এর আশংকাও।