অনিয়মিত ঋতুচক্র? জেনে নিন এমনটা হলে কী করা উচিত

ঋতুচক্র বা মাসিক পিরিয়ড অনিয়মিত কিনা বোঝার আগে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া দরকার। প্রত্যেক মহিলার ঋতুর প্যাটার্নটা আলাদা হয়। কারও একেবারে ঘড়ির কাঁটার মতো নিয়মিত ব্যবধানে ফিরে আসে মাসিক চক্র। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার তারিখের ঠিক না থাকাটাই দস্তুর। আপনার সহকর্মীর সাইকেল 27 দিনের, আর আপনার ক্ষেত্রে মাঝে-মধ্যেই মাস পেরিয়ে যায়? চিন্তা করবেন না, আপনি মোটেই অনিয়িমত ঋতুর সমস্যায় ভুগছেন না, হয়তো আপনার চক্রটাই 32 দিন পর ফিরে আসে! হ্যাঁ, জেনে রাখুন যে, 24-38 দিনের ব্যবধানটা অস্বাভাবিক নয়। কারও কারও ঋতুস্রাব মাত্র দু’দিন স্থায়ী হয়, কেউ আটদিন পর্যন্ত ঋতুমতী থাকেন – এটাও স্বাভাবিক। তবে, যদি আপনার ক্ষেত্রে ঋতুর ফিরে আসা বা স্থায়ী হওয়ার কোনও নির্দিষ্ট প্যাটার্ন না থাকে, অর্থাৎ কোনও মাসে হয়তো 25 দিনের মাথায় রজস্বলা হলেন, আবার তার পরের মাসে 40 দিন পেরিয়ে গেলো বা হয়তো এক মাসে পাঁচদিন রক্তপাত হল, পরের মাসে তা দেড় দিনও স্থায়ী হল না – এমন হলে কিন্তু বুঝতে হবে যে আপনার ঋতুচক্র সত্যিই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, যদি আপনার স্বাভাবিক রক্তপাতের পরিমাণে কোনও পরিবর্তন দেখেন, তা হলেও সতর্ক হওয়া উচিত।

কোন কোন কারণে ঋতু অনিয়মিত হয়ে পড়ে?

গর্ভাধান: অবশ্যই, ঋতুচক্র মিস করার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে গর্ভাধান। স্তন্যপান করালেও পিরিয়ড মিস করতে পারেন আপনি। তাই যাঁদের পিরিয়ড খুব নিয়মিত, তাঁরা মাঝে হঠাৎ করেই তা মিস করলে একবার প্রেগন্যান্সি চেক করিয়ে নিন।

ইনট্রা-ইউটেরাইন ডিভাইস (IUD): আপনি কি সদ্য ইনট্রা ইউটেরাইন ডিভাইস ব্যবহার করতে আরম্ভ করেছেন? তার প্রভাবেও পিরিয়ড মিস হতে পারে।

ওষুধের প্রভাবে: কোনও বিশেষ ওষুধের প্রভাবে অনেক সময়ে ঋতু অনিয়মিত হয়ে পড়ে। কিন্তু আপনার শরীরে সেটি অ্যাডজাস্ট করে গেলে তেমনটা আর হওয়ার কথা না।

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম: যদি ওজন বাড়া আর অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যাটা মোটামুটি একই সময়ে শুরু হয়, তা হলে অবশ্যই আপনার গাইনিকোলজিস্টের দ্বারস্থ হোন। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে।

ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড: ইউটেরাসে ফাইব্রয়েড হলেও অনিয়িমত ঋতুস্রাব দেখা দেয়। পলিপ থাকলেও তেমনটা হতে পারে। রুটিন পরীক্ষার সময়েই তা ধরা পড়ার কথা।

অতিরিক্ত এক্সারসাইজ়: যাঁরা খুব কঠিন এক্সারসাইজ় করেন, তাঁদের পিরিয়ড মিস হতে পারে।

থাইরয়েড বা অন্য কোনও হরমোনের স্তরে পরিবর্তন: যে কোনও হরমোনের স্তরে পরিবর্তন হলেও কিন্তু পিরিয়ডের সাইকেলে পরিবর্তন আসে।

মেনোপজ়: মেনোপজ়ের প্রক্রিয়াটি খুব ধীর গতিতে চলে। রাতারাতি কিন্তু আপনার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাবে না। 40 বছরের পর যে কোনও মহিলারই ঋতুচক্র অনিয়মিত হতে আরম্ভ করতে পারে, একটা সময়ে তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে।

স্ট্রেস: মারাত্মক স্ট্রেসের কারণে আপনার হরমোন লেভেল ভারসাম্য হারায় সে কারণেও পিরিয়ড সাইকেলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy