বাচ্চাদের মুখ থেকে লালা বের হওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার। শিশুর ৪ বছর পর্যন্ত মুখ দিয়ে লালা বের হতে পারে। এ সময়ে শিশুর মুখের স্নায়ু ও পেশি বাড়তে থাকার কারণে লালা বেশি উৎপন্ন হয়। কিন্তু বয়স্কদের মধ্যেও ঘুমন্ত অবস্থায় কারও কারও মুখ থেকে লালা ঝরতে দেখা যায়। এই লালা থেকে মাথার বালিশ ও কাপড়চোপড়ও ভিজে যায়। এটি এক ধরনের অসুস্থতা। তাই লজ্জা না পেয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।
চিকিৎসকদের মতে, ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানোর জন্য লালা ঝরতে পারে। অনেকে দুটো বাহু টেবিলে রেখে তার ওপর মাথা দিয়ে ঘুমান। এই অবস্থায় সহজেই লালা পড়তে পারে। আবার বালিশে মাথা রাখার ভঙ্গি হয়তো ঠিক থাকে না, এ থেকেও লালা পড়তে পারে। তাই লালা পড়া বন্ধ করতে ঘুমের ভঙ্গি ঠিক করতে হবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক আর কি কি কারণে মুখ থেকে লালা পড়ে…
* অনেকে দাঁত দিয়ে নখ কেটে থাকেন, আবার মুখে যখন তখন আঙ্গুল দেওয়া এবং কোনো জিনিসের ওপর সরাসরি কামড় দেওয়ার অভ্যাসও আছে অনেকের। এ থেকে মুখের তাপমাত্রা ও আদ্রতা কমে গিয়ে মুখের ভেতর সহজেই ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়। এই কারণে মুখ থেকে লালা পড়তে পারে।
* দাঁতের ফাঁকে ছোট ছোট খাবারকণা জমে থাকার কারণে দাঁতের সুস্থতা নষ্ট হয়। দাঁত অসুস্থ হলে লালা পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার মাউথ আলসারের কারণে মুখে থুতু বেড়ে যায়। ঘুমালে এই থুতু লালা আকারে বের হয়। এই সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে ভাল থাকা যায়।
* শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মস্তিষ্কের বেশি ব্যবহার অথবা কিছু ওষুধ খাওয়া থেকে স্নায়ুতন্ত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এই কারণে ঘুমের সময় মস্তিষ্ক কিছু ভুল সংকেত পাঠায়। এতে মুখে থুতু বেড়ে গিয়ে লালা পড়তে পারে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ঠিক সময়ে খাওয়া, পরিমিত খাওয়া, ভিটামিন সি’সহ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া জরুরি মনে করেন।
* বয়স্কদের মুখ থেকে লালা পড়ার সমস্যার সঙ্গে পিলে ও পাকস্থলির ভারসাম্যহীনতা জড়িত বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। পিলে ও পাকস্থলি দুর্বল হলে এ অবস্থা দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যা থাকলে ঘুম ভালো হয় না, ফলে এর কারণে শরীরে অন্যান্য রোগের সঙ্গে লালা পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
* ঠাণ্ডা লাগার পর ঘুমের সময় লালা পড়তে পারে। এ সময় যদি মুখের কোণা একটু বাঁকা বা ঢালু হয়, তাহলে এটি মুখের স্নায়ুতন্ত্র সমস্যার উপসর্গ। এক্ষেত্রে সাবধান হওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।bs