মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া মানবদেহে যক্ষ্মা বা টিবি রোগ তৈরি করে। এই রোগে প্রতি বছর বহু মানুষের মৃত্যু হয়। প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসে এই সংক্রমণ হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে যেকোনো অঙ্গেই হতে পারে যক্ষ্মা।
সরকারের তরফ থেকে এই রোগ নির্মূল করার উদ্যোগ নেয়া হলেও সম্প্রতি এই ব্যাক্টেরিয়ার এমন একটি রূপ দেখা দিয়েছে যা কাবু হচ্ছে না ওষুধে। দেখে নিন কাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি-
>> হাঁচি-কাশির মধ্যে দিয়ে বাতাসে ছোট ছোট কণার আকারে এই ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। কাজেই রোগীর কাছাকাছি থাকলে অনেকটাই বেড়ে যায় এই রোগের ঝুঁকি। শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে গেলে হতে পারে রোগ সংক্রমণ। ফলে যক্ষ্মা রোগীর বাড়ির লোক এবং চিকিৎসক ও নার্সদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে অনেকটাই।
>> যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমজোর, তাদের ক্ষেত্রে অনেকটাই বেড়ে যায় যক্ষ্মার আশঙ্কা। শুধু ফুসফুস নয়, ফুসফুসের আবরণী, লসিকাগ্রন্থি, যকৃত, বৃক্ক, মস্তিষ্ক, অন্ত্র, হাড় এমনকি ত্বকেও হতে পারে যক্ষ্মা। তবে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।
>> যেহেতু এই জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা খুব বেশি, তাই ঘিঞ্জি ও অপরিষ্কার স্থানে বসবাস করলে ও পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে বাড়ে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা।
>> ডায়াবেটিস ও কিডনির অসুখ থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনিতেই এই অঙ্গগুলোর সমস্যা থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। পাশাপাশি, ডায়াবেটিস ও কিডনির রোগীরা কিছু ক্ষেত্রে অনাক্রম্যতা প্রতিরোধক ওষুধ খান। ফলে রোগ জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায় অনেকটাই।
>> মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের ফুসফুস যক্ষ্মা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষদের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি। পাশাপাশি, ক্যান্সার রোগীরা যেহেতু কেমথেরাপি করান, তাই অনেক ক্ষেত্রেই দুর্বল হয়ে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেড়ে যায় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
>> পরিবেশ দূষণ, ধূমপান, মাদকাসক্তি, বার্ধক্য এবং অপুষ্টিও যক্ষ্মার ঝুঁকি বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়। যাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম, যেমন এইড্স রোগী, দীর্ঘ মেয়াদে স্টেরয়েড বা ইমিউনোথেরাপি ওষুধসেবীরাও যক্ষ্মার ঝুঁকিতে রয়েছেন। কাজেই ঝুঁকি কমাতে সন্তানকে অবশ্যই দিতে হবে বিসিজি টিকা।