ডিহাইড্রেশন কি? বুঝবেন যে উপায়ে ,শিখেনিন কৌশলগুলো

খাবার ছাড়া মানুষ বেশ কয়েকদিন কাটিয়ে দিতে পারে বটে, জল ছাড়া কিন্তু কারও একটা দিনও চলবে না। সমস্যা হচ্ছে যে এই সহজ সত্যটা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, বিশেষ করে শীতের দিনে। শীতকালে ঘাম হয় না, তাই তেষ্টাও তেমন পায় না। আর সেই কারণেই জল খাওয়াটা ক্রমশ কমতে থাকে। মনে রাখবেন, আপনার শরীরের 75 ভাগ জল দিয়েই তৈরি – কোনও কারণে তার ঘাটতি তৈরি হলে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে না। যাঁরা জল কম খান, তাঁদের নানারকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। সেই লক্ষণগুলি দেখতে পেলেই সতর্ক হোন ও পরিবর্তন আনুন আপনার দৈনিক জীবনচর্যায়।

মাথা ধরা ও ক্লান্তি: মাইল্ড ডিহাইড্রেশনের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে মাথা ধরা আর ক্লান্তি। আমাদের ঘাম, মল-মূত্র, চোখের জল এমনকী শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গেও কিছুটা জল হারায় শরীর। সেই ঘাটতি যদি সময়মতো পূরণ না হয়, তা হলে মাথা ধরে থাকবে, ক্লান্তবোধ করবেন। মনঃসংযোগে অসুবিধে হবে এবং বিরক্তির মাত্রা বাড়বে। জিমে ব্যায়াম করার সময়ে খুব ঘামেন? সেক্ষেত্রে ওয়ার্কআউট চলাকালীন অল্প অল্প করে জল খেতে থাকুন, তা না হলে শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়বে।

কোষ্ঠকাঠিন্য: আপনি কি প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন? তা হলে আগে জল খাওয়ার মাত্রা বাড়ান। কোলন জল শোষণ করে এবং সেটিই শরীরের কঠিন বর্জ্য জমা রাখার প্রধান স্থান। তাই আপনি জল কম খেলেই তা মল থেকেও জল শোষণ করে নেবে। ফলে মল হয়ে পড়বে কঠিন, তা শরীর থেকে বেরনোর সময়েও সমস্যা হবে। জল খান বেশি করে, তাতে হজম ভালো হবে, মল নরম থাকবে।

নিশ্বাসে দুর্গন্ধ: স্যালাইভা তৈরিতে ও মুখের মধ্যে জমে ওঠা ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে জলের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। জল কম খেলে কম লালা তৈরি হবে, মুখের মধ্যে জন্মানো ব্যাকটেরিয়া জমে উঠবে জিভে, দাঁতে, মাড়িতে। ফলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। যাঁরা মুখের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য যে সব বিধি মানা দরকার, সেগুলি যথাযথভাবে মেনে চলার পরেও শ্বাসের দুর্গন্ধ টের পাচ্ছেন, তাঁরা রোজ লিটারখানেক জল খাওয়া বাড়ান। তার পর দেখুন কী হয়।

বারবার অসুখ হওয়া: শরীরের যাবতীয় টক্সিন, ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সাহায্য করে জল। যাঁরা জল কম খান, তাঁদের শরীরে বিষাক্ত পদার্থগুলি বেশিক্ষণ জমে থাকে। ফলে ক্রমশ দুর্বল হতে আরম্ভ করে প্রতিরোধক্ষমতা। জল কম খেলে চেপে ধরে ক্লান্তিও, ফলে সত্যিই আপনার ফিটনেস খুব দ্রুত কমতে আরম্ভ করে।

ত্বকের অনুজ্জ্বলতা: শরীরে টক্সিন জমে থাকলে আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হতে আরম্ভ করবে। ত্বক তার স্থিতিস্থাপকতা ও ঔজ্জ্বল্য হারাবে, বলিরেখা পড়তে আরম্ভ করবে সময়ের আগেই। ব্রণ বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনও ফিরে ফিরে আসবে দুর্বল ইমিউনিটির কল্যাণে। এই পরিস্থিতি এড়াতে চাইলে আজই জল খাওয়া বাড়ান। বিশেষ করে শীতের দিনে ত্বক খসখসে হয়ে যাবে, চুল হয়ে পড়বে রুক্ষ।

মূত্রে জ্বালাভাব: মূত্রের মাধ্যমে আমাদের শরীর প্রচুর টক্সিন বের করে দেয়। যাঁরা জল কম খান, তাঁদের ইউরিন কম হয় এবং হলেও তাতে জ্বালাভাব থাকে।

বারবার খিদে পাবে: আপনার শরীরের খিদে আর তৃষ্ণার বোধ জানান দেয় যে কেন্দ্রগুলি, সেগুলির অবস্থান খুব কাছাকাছি। তাই অনেক সময়েই আমরা তৃষ্ণার সিগন্যালকে খিদের বোধ বলে ভুল করি। যাঁরা ক্রনিক ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন, তাঁদের মিষ্টি বা ভাজাভুজিজাতীয় খাবারের প্রতি বেশি আকর্ষণ থাকে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy