ঋতুস্রাবের সময় মেয়েরা কী কী সমস্যায় ভোগেন আপনি কি জানেন এই বিষয়ে?

ঋতুস্রাব বেশিরভাগ নারীদের জীবনে আসে স্বাভাবিক নিয়মেই। বিশ্বের নারী জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের ঋতুস্রাব হয়। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৬ শতাংশের বয়স প্রজনন-কালের মধ্যে। বেশিরভাগ নারীর প্রতি মাসে প্রায় দুই থেকে সাত দিন মাসিক হয়। তবুও, এই স্বাভাবিক নিয়মটা নিয়ে সমাজে এখনও সাত-সতেরো ট্যাবু। ঋতুস্রাব সম্পর্কে অনেকেই সাধারণ তথ্যগুলিও জানেন না। বেশ কিছু ক্ষতিকারক ভুল ধারণা মনের মধ্যে ঢুকে বসে আছে। আর তা থেকেই শুরু হয় লিঙ্গ বৈষম্য। কৈশোরে মেয়েরা অনেক অভিজ্ঞতা এবং আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়ে যায় পিরিওড নিয়ে এই ঢাক-ঢাক-গুড়-গুড়ের কারণে।

UNICEF এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিশ্বের বহু মেয়েই অনেক সময় এই নিয়ে মানসিক চাপ, লজ্জায় ভোগেন। সারা বিশ্বে গড়ে একজন নারীর জীবদ্দশায় প্রায় ৭ বছর মাসিক হয়।

সারা বিশ্বের কোথাও কোথাও প্রথম পিরিয়ড উদযাপন করা হয়। আবার কোথাও এটা একটি মেয়ের জীবনে ভয় বা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিটি মেয়ের জন্য, এই সূচনা নারীত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এই সময় দরকার পরিবারের মানুষের সাহায্য ও পাশে থাকা।

পিরিওড যে একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, এই ধারণাটুকুই নেই অনেকের। অনেক মেয়েরই সেই ধারণা নেই, কেন ঋতুস্রাব হয়। মেয়েদের প্রথম পিরিয়ডের আগে শিক্ষিত করার রীতিও নেই বেশির ভাগ পরিবারে, কারণ এটি একটি লজ্জার কারণ হিসেবে দেখা হয়।

ইউনিসেফ মনে করে, ঋতুস্রাব সম্পর্কে ছেলেদেরও ধারণা থাকা জরুরি।

পিরিওড সম্পর্কে না-জানার ফলে অনেক বড় সংক্রমণ হতে পারে। এটি প্রজনন এবং মূত্রনালীর সংক্রমণের সঙ্গে যুক্ত।

অনেক নারীই মাসিকের সময় জরুরি জিনিস পাননা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সংঘর্ষ ও জরুরী পরিস্থিতিতে, ইউনিসেফ নারীদের মেনস্ট্রুয়াল কিট সরবরাহ করে, যার মধ্যে রয়েছে স্যানিটারি প্যাড, একটি টর্চলাইট এবং টয়লেট ব্যবহার করার সরঞ্জাম থাকে।

বিশ্বব্যাপী, ২.৩ বিলিয়ন মানুষের স্যানিটেশনের মৌলিক সরঞ্জামের অভাব রয়েছে এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যার মাত্র ২৭ শতাংশের বাড়িতে জল এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সুবিধা রয়েছে। বাড়িতে পিরিয়ডের সময়ে মৌলিক সুবিধাগুলিও তারা পায় না।

নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে প্রায় অর্ধেক স্কুলে পর্যাপ্ত পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির অভাব রয়েছে যা মেয়েদের পিরিয়ড-কালে খুব অসুবিধেয় ফেলে।

ইউনিসেফ স্থানীয় সম্প্রদায়, স্কুল এবং সরকারের সাথে গবেষণা এবং মাসিক সম্পর্কে তথ্য প্রদান, ইতিবাচক স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাস প্রচার এবং ট্যাবু ভাঙতে কাজ করছে। ইউনিসেফ দরিদ্রতম অঞ্চলগুলির কয়েকটি স্কুলে টয়লেট, সাবান এবং জল সহ পর্যাপ্ত সুবিধা এবং সরবরাহ করে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy