বর্তমানে ডিমনেশিয়া রোগে অনেকেই ভুগছেন। আর এ কারণেই বিগত কয়েক বছরে মানুষের মধ্যে ডিমেনশিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাদি জানার আগ্রহ ও সচেতনতা বেড়েছে। ডিমেনশিয়া হলো ভুলে যাওয়ার রোগ। এর লক্ষণগুলো সাধারণত ৬০ বছরের পরে দেখা দিতে শুরু করে। তবে বর্তমানে জীবনযাত্রার অনিয়ম ও স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসহীন থাকার কারণে ৩০-৪০ বছরেও অনেকের মধ্যে এ সমস্যা মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
দরিদ্র জীবনযাপন, অনিয়মিত খাওয়ার ধরন ও শারীরিক কার্যকলাপের অভাব মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। ডিমনেশিয়া প্রাথমিক অবস্থায় টের পাওয়া যায় না। তবে বয়স বাড়তেই এ সমস্যা মারাত্মক প্রভাব ফেলে শরীরে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি চারগুণ বাড়িয়ে তোলে সকালে খাবার না করা হলে। কারণ সকালের খাবার হলো দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। সকালে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আপনি মনোযোগ সহকারে ও সক্রিয়ভাবে দিন কাটাতে পারবেন।
অন্যদিকে সকালের খাবার বাদ দিলে আপনি সারাদিন আরও ক্লান্তবোধ করবেন। নতুন এক গবেষণা প্রমাণ করে যে, দিনের প্রথম খাবার বাদ দিলে পরবর্তী জীবনে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি চারগুণ বেড়ে যায়।
২০১১ সালে জাপানিজ জার্নাল অব হিউম্যান সায়েন্সেস অব হেলথ-সোশ্যাল সার্ভিসেস এ প্রকাশিত ফলাফলে জানা গেছে এই তথ্য। এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল জীবনযাত্রার অভ্যাস ও ডিমেনশিয়ার মধ্যকার যোগসূত্রতা বোঝা।
জাপানের একটি গ্রামের কৃষক সম্প্রদায়ে ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণাটি চালানো হয়েছিল। যেখানে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রায় ৫২৫ জন বয়স্ক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছিলেন। গবেষণার শেষে দেখা গেছে, লিঙ্গ ও বয়স নির্বিশেষে, যারা প্রাতঃরাশ করেননি তাদের ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি চারগুণ বেশি ছিল।
গবেষণায় আরও প্রকাশ করা হয়, স্ন্যাকিংয়ের মতো অন্যান্য খাদ্যাভ্যাসও একজন ব্যক্তির ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পায়ে। এতে দেখা গেছে, দুপুরের আগে কিংবা বিকেলে খাবার করেননি তাদের ২.৭ গুণ, যারা লবণ বেশি খেয়েছেন তাদের ২.৫ গুণ ও যারা একটি সুষম খাদ্যের প্রতি যত্নশীল নন তাদের পরবর্তী জীবনে ডিমেনশিয়া ধরা পড়ার ঝুঁকি ২.৭ গুণ বেশি।
ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে কী খাবেন?
এজন্য খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ একটি সুষম খাবার আপনাকে ডিমেনশিয়াসহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।
শিকাগোর রাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ডায়েটে যে খাবারগুলো রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো হলো- আস্ত শস্য, বাদাম ও বীজ, স্বাস্থ্যকর চর্বি, শাক সবজি ও ফল।