শারীরিক চাহিদা মেটাতেই কি বিবাহিত হয়েও তৃতীয় ব্যক্তির প্রতি আকর্ষিত হয় ?জেনেনিন কি বলছে গবেষণা

পরকীয়া এটি নতুন কোনো বিষয় নয়! বর্তমান বিশ্বের পাশাপাশি আমাদের দেশেও এখন এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন, ফেসবুকসহ নানা প্রযুক্তি মানুষের হাতের মুঠোয়, তাই আজকাল পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলা অনেক সহজ।
তবে কি এই পরকীয়া সম্পর্ক? কেন এটি গড়ে উঠছে? নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে বহুগামিতা অনেকটাই জেনেটিক, তারপর মনোদৈহিক, আর্থ-সাংসারিক, পারিপার্শ্বিক, উচ্চাকাঙ্খা, পণ্যপ্রাচুর্য জীবনের হাতছানি ইত্যাদি। বর্তমান বিবাহ প্রথা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বিভিন্ন বিবাহ রীতি প্রচলিত ছিল।

এক পতিপত্নীরূপ শুরু হওয়ার আগে বহুপতিপত্নী বা অনেকটা অবারিত দেহসম্পর্ক বহু সমাজে ছিলো সাধারণ রীতি। তাই আমাদের পূর্বপুরুষের ডিএনএ-র এক্সটেনশন হিসেবে সেই প্রবৃত্তি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। সংক্ষেপে পরকীয়া বা বিবাহোত্তর সম্পর্কের কয়েকটি কারণ সম্পর্কে জেনে নিন-

অনেকেই ভেবে থাকেন পরকীয়ায় শুধু শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য মানুষ আসক্ত হন। এটি একটি কারণ হতে পারে! তবে আরো কিছু কারণ রয়েছে পরকীয়ার আসক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে।

মানসিক শান্তি

ভালোবাসা ও নিরাপত্তার প্রতিমূর্তি রূপে নারী মনের গভীরে স্থায়ীভাবে থেকে যেতে পারে পিতার অবয়ব, কোনো ক্ষেত্রে বড় ভাইয়ের। ঠিক অনুরূপ পুরুষদের মনোজগতে মা বা এমন কোনো নারীর আদর্শ গেঁথে থাকতে পারে। যেখানে পেয়েছিল ভালোবাসা ও মানসিক প্রশান্তি, উদ্বেগহীন জীবনের স্বাদ, বিশ্বাস ও ভরসা। এই নারী-পুরুষ যখন বিয়ের পর কঠিন সংসার জীবনে এসবের ঘাটতি দেখতে পায়, তখনই তাদের আগের কথা মনে পড়ে। তারপর জীবনের কোনো ঘটনাচক্রে যদি তেমন পুরুষ বা নারীর সংস্পর্শে আসে। বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতা থেকে মোড় নিতে পারে ভালোবাসাতে।

মতের অমিল

দু’জনের আবেগের ধরণ একরকম না থাকাতে বোঝাপড়া বা ভাবনার মিল না থাকাটা স্বাভাবিক। তবে একই মানুষ যদি হঠাতই দু’রকম ব্যবহার করে তাহলে অশান্তি অনিবার্য। তারপর ঘটতে পারে বিপরীত চলা। জীবনের কিছু প্রধান চাহিদার মধ্যে ইমোশনাল বোঝাপড়া থাকতে হয়। অন্যকে বুঝতে পারা বা বুঝার চেষ্টা করা এবং সেরূপ নিজেকে উপস্থাপন করা মানসিক জগতের একমাত্র দাবি। তার অভাব দেখা দিলে বাস্তব জীবনে গোলমাল বাধে।

ফান থেকে ফাঁদ

এ ব্যাপারটা পুরুষের বেলায় সহজে ঘটে যায়। কারণ তাদের জগতটা বিস্তৃত, বিচিত্র, জীবনের প্রয়োজনেই ছুটতে হয়ে, বহু জনের সঙ্গে মিশতে হয়ে। এমন সুযোগে সুখি দাম্পত্য সত্বেও অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং সংসারে সংঘাত শুরু হয়। তবে আজকাল নারীরাও কর্মজীবী, বাইরে ছুটতে হয়, ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়াতে চ্যাটিং ইত্যাদির সুযোগ উভয়ই উপভোগ করে থাকে। তাই নারী পুরুষ যেকোনো পক্ষই চিটিং করতে পারে।

অল্প বয়সে বিয়ে

আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক তরুণ তরুণী কম বয়সে বিয়ে করে ফেলে। এই সময়ে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে মানসিক বুদ্ধি-চিন্তা কাজ করে না। যুক্তির চেয়ে আবেগই বড় হয়ে দেখা দেয়। যার কারণে বিয়ের কিছুদিন পরই সেইসব স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন রকমের মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এবং এই সময়েই সেই স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ফলে, একসময় এই বিবাহিত জীবন ডিভোর্স এর পর্যায় চলে যায়।

যৌন অসন্তোষ

এ সমস্যা সম্পূর্ণ শারীরিক এবং স্বাভাবিক। এমন নারী পুরুষ যে কারো ক্ষেত্রে ঘটতে পারে। পার্টনারের দুঃখজনক দুর্বলতাকে মানতে না পারলে অন্যত্র সে অভাব মেটানোর ভাবনা আসতে পারে।

এছাড়া অন্যান্য আরো কারণ যেমন- আর্থিক ফায়দা, ক্যারিয়ারের উন্নতি, সামাজিক মর্যাদা প্রভৃতির প্রলোভন নারী পুরুষ উভয়ই বিয়ের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারে, করে থাকে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy