সামুদ্রিক মাছ ইলিশ। স্বাদে অতুলনীয় বলে মাছের জগতে ইলিশ রাজা। যদিও এর স্বাদ সবারই নেওয়া তবুও অপেক্ষায় থাকে আবার কখন খাবার প্লেটে পাওয়া যাবে এই রূপালী ইলিশ। বর্তমান সময়ে বাজার থেকে শুরু রাস্তাঘাটে প্রচুর ইলিশের দেখা মিলছে। দামও মোটামুটি আয়ত্তে।
ইলিশ খাওয়ার ধরন অনেক। ভাজা ইলিশ, সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, দই ইলিশ, পটল ইলিশ, ইলিশ পোলাউ এ রকম ৫০ রকমের রন্ধনপ্রণালী রয়েছে ইলিশ দিয়ে। এর সঙ্গে আছে ইলিশের ডিমও। যা অনেকের কাছে বেশ প্রিয়।
মজা করে ইলিশ তো খান! জানেন কি এই ইলিশের পুষ্টিগুণ? ১০০ গ্রাম ইলিশে প্রায় ২১ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।
এবার জেনে নিন ইলিশ মাছের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ-
খনিজ উপাদানে ভরপুর
ইলিশ মাছে আছে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম। থাইরয়েড গ্ল্যান্ড সুস্থ রাখে আয়োডিন, সেলেনিয়াম উৎসেচক ক্ষরণে সাহায্য করে যা ক্যান্সারের মোকাবিলা করতে পারে। এ ছাড়াও ইলিশে থাকা খনিজ বিশেষ করে ফসফরাস দাঁত এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের পুষ্টির জন্য একান্ত অপরিহার্য। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও লৌহ স্বাভাবিক শরীর বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান।
হার্টের জন্য ভালো
ইলিশ মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না। সামুদ্রিক মাছ হিসেবে ইলিশে সম্পৃক্ত চর্বিও কম। যার ফলে ইলিশ খেলে হার্ট থাকবে সুস্থ।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
ইলিশ মাছ রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভালো। এতে EPA ও DHA নামক ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে থ্রম্বসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় ও রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি হওয়া প্রতিরোধে ইলিশ মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাট সাহায্য করে। তাছাড়া ইলিশ মাছে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান। এই কোলাজেন ত্বক টাইট ও নমনীয় রাখতে সাহায্য করে।
চোখ ভাল রাখে
ইলিশের ভিটামিন-এ এবং ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চোখের সুস্থতা রক্ষায় সাহায্য করে। ইলিশ মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং চোখ উজ্জ্বল হয়। বয়সকালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসার মোকাবিলা করতে পারে এই ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড।
ভিটামিন এ, ডি এবং ই রয়েছে প্রচুর
ইলিশ মাছে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, ডি এবং ই৷ বিশেষ করে ভিটামিন ডি খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়৷ যা ইলিশে সহজেই মেলে। ইলিশে থাকা ভিটামিন-এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে এবং ভিটামিন-ডি শিশুদের রিকেট রোগ থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া এতে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অবসাদ, আলসার, কোলাইটিসের হাত থেকেও রক্ষা করে।
ইলিশ মাছ খেলে কারো কারো শরীরে অ্যালার্জি বা গ্যাসের উদ্রেক হতে পারে। সেক্ষেত্রে আগে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ইলিশ মাছের বিরূপ প্রভাব আছে কিনা, থাকলে ইলিশ এড়িয়ে চলাই ভাল।