একজন ব্যক্তির যকৃতে দরকারের চাইতে বেশি চর্বি জমে গেলে সেটিকে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলা হয়। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা এনএইচএস বলছে, যকৃতে কিছুটা চর্বির উপস্থিতি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু একজন ব্যক্তির যকৃতের যে ওজন, তার ১০ শতাংশের বেশি যদি চর্বি হয় তখন সেটিকে ফ্যাটি লিভার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় বর্তমানে অনেকেই ভুগছেন। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা আবার দু’ভাবে বিভক্ত- অ্যালোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার মূল কারণ হলো মদ্যপান। তবে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার অ্যালকোহল সেবনের সঙ্গে যুক্ত নয়। যে কারো এ সমস্যাটি হতে পারে। তবে জীবনযাত্রার অনিয়মের ফলেই এ রোগ বেশি দেখা দেয়।
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ কী?
এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে লিভারে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি জমা হয়। এই চর্বি জমা অবশ্য অ্যালকোহল ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত বা সম্পর্কিত নয়। এনএএফএলডিও দু‘ধরনের হতে পারে- সাধারণ ফ্যাটি লিভার (এনএএফএল) ও নন অ্যালকোহলিক স্টেটোহেপাটাইটিস (এনএএসএইচ)।
সাধারণ ফ্যাটি লিভার বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায় যেখানে লিভারে চর্বি জমা হয়, তবে প্রদাহ ও লিভারের ক্ষতির কোনো লক্ষণ থাকে না।
অন্যদিকে নন অ্যালকোহলিক স্টেটোহেপাটাইটিস (এনএএসএইচ) হলো এনএএফএলডি’র একটি গুরুতর রূপ। কারণ এটি শুধু চর্বিই জমা করে না, এর সঙ্গে লিভারের কোষগুলোর প্রদাহও বেড়ে যায়।
যা ফাইব্রোসিস বা লিভারে দাগের সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময়ে এটি আরো জটিলতা সৃষ্টি করে, যা লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারের দিকে পরিচালিত করে।
সকালের যে লক্ষণ দেখলে সাবধান থাকবেন
ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় শরীরে নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ক্লান্তি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে সতর্ক থাকতে হবে। ক্লান্তবোধ করার বিষয়টি কখনো হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়। বিশেষ করে যখন এটি ঘন ঘন হয়।
ক্লান্তি ছাড়াও যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো-
* পেটের উপরের ডানদিকে অস্বস্তি বা ব্যথা
* পেট ফুলে যাওয়া
* জন্ডিস
* ত্বকের পৃষ্ঠের ঠিক নীচে বর্ধিত রক্তনালি
* অব্যক্ত বা অনিচ্ছাকৃত ওজন কমা ইত্যাদি।
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কাদের বেশি?
যদিও নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার রোগের সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে গবেষকরা ধারণা করেন এটি ডায়াবেটিক ও স্থূল ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দিতে পারে।
যাদের রক্তে উচ্চ মাত্রার চর্বি, যেমন- কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড বা যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদেরও এই রোগের ঝুঁকি বেশি। আবার কর্টিকোস্টেরয়েডসহ কিছু ওষুধ ও ক্যান্সারের ওষুধও এই রোগের কারণ হতে পারে।