চোখ একটি স্পর্শকাতর সংবেদনশীল অঙ্গ, যার সাহায্য আমরা এই সুন্দর পৃথিবী দেখতে পাই, তার রূপ উপভোগ করি। চোখে দেখতে না পাওয়া মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ।চোখ এবং এর আশপাশে বহু কারণে ব্যথা হতে পারে। চোখ বা চোখের আশপাশে কোনো ব্যথা হলে প্রাথমিক পর্যায়ে চোখ ব্যথাকে মাথা ব্যথা থেকে পার্থক্য করতে হবে। শুধু যে চোখ ব্যথা হলেই চোখের অসুখ তা কিন্তু নয়, চোখ ব্যথা চোখের রোগ থেকেও হতে পারে আবার শারীরিক অন্য রোগ থেকেও হতে পারে।
চোখ ব্যথা কী কী কারণে হয়?
অনেক রোগের কারণেই চোখ ব্যথা হতে পারে। যেমন- চোখ ওঠা, চোখের মণির কোনো রোগ, আঘাতজনিত কোনো রোগ, চোখের ভেতরের রোগ ইত্যাদি। শরীরের রোগের মধ্যে মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণে চোখ ব্যথা হতে পারে। চোখ ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে আছে—
কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠলে চোখ লালচে হয়, চুলকায়, জ্বালাপোড়া করে। সাধারণত অ্যালার্জি থেকে চোখের আবরণীর এই প্রদাহ দেখা দেয়। তবে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণেও হতে পারে।চোখের পাতায় প্রদাহ হলেও চোখ ব্যথা করতে পারে।কর্নিয়ায় আঘাত বা কিছু ঢুকলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে তীব্র ব্যথা হয়।কর্নিয়ায় ইনফেকশন হলে ব্যথা হয়, চোখে অস্বস্তি বোধ হয়। । যাঁরা কনটাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁদের এই ইনফেকশন বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চোখে কিছু ঢুকলে তা যত ছোটই হোক অস্বস্তি হবেই। তবে দানাদার, রাসায়নিক, ধোঁয়া ইত্যাদিতে চোখ ব্যথা হতে পারে। সাধারণত ভালো করে জল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করে ফেললে সমস্যাটি চলে যায়।
গ্লুকোমা চোখের একটি রোগ, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে গিয়ে রোগটি হয়। লক্ষণ হিসেবে থাকতে পারে তীব্র চোখ ব্যথা, বমি ও বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা না করলে এ থেকে অন্ধত্বও হতে পারে।
চোখের নার্ভের প্রদাহ হলেও চোখে তীব্র ব্যথা হয়। সাধারণত স্ক্লেরোসিস, ইনফেকশন থেকে এ রোগ হয়। এতে দৃষ্টিশক্তিও কমে যায়
সাইনোসাইটিস হলেও চোখে ব্যথা হতে পারে। চোখের চারদিকে এসব সাইনাসের অবস্থান বলে এই ব্যথা হতে পারে।চোখে অঞ্জনি হলে খুব ব্যথা হয়।
চোখ ব্যথার সঙ্গে অন্য কী কী উপসর্গ দেখা দিতে পারে?
সাধারণত চোখ ব্যথার সঙ্গে এই উপসর্গগুলো দেখা যায়। যেমন—দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, চোখ দিয়ে জল বা পিঁচুটি পড়া, চোখের ভেতর কিছু আটকে আছে এমন অনুভূতি হওয়া, মাথা ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে অস্বস্তিবোধ, চোখে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, বমি ও বমি বমি ভাব, চোখের মণি লালচে বা গোলাপি হয়ে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠার পর পিঁচুটি জমে চোখ বন্ধ হয়ে থাকা।
চিকিৎসাঃ চোখ ব্যথার পাশাপাশি যদি হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, চোখে অসহনীয় ব্যথা হয়, মাথা ঘোরানো থাকে—এ ধরনের কোনো অসুবিধা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।সাধারণ যে কারণগুলোর জন্য চোখ ব্যথা হয়, চিকিৎসকের পরামর্শে সেগুলোর যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।