কফি পৃথিবী জুড়ে জনপ্রিয় একটি পানীয়। ক্লান্তি দূর করতে এর খ্যাতি রয়েছে বেশ। তবে এমন কথাও শোনা যায় যে, কফি পানে হতে পারে জটিল অসুখ। কিন্তু এমন কথা অনেকবেশি ছড়ালেও এর প্রমাণ তেমন মেলেনি। কফি পান করা নিয়ে এমন প্রচলিত অনেক ধারণার ৯০ শতাংশই ভুল।
কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন একটি প্রাকৃতিক পদার্থ, যা বিশ্বব্যাপী ৬৩টিরও বেশি উদ্ভিদ প্রজাতির পাতা, বীজ এবং ফলের মধ্যে পাওয়া যায়। সম্প্রতি উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (এনার্জি ড্রিংকস) তৈরি করা হয়েছে এবং তা বিপুল জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
কফির সবচেয়ে পরিচিত প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি হল ক্লান্তিকে সাময়িক ভাবে বিলম্বিত করার জন্য একটি উদ্দীপক হিসাবে এর কাজ করার ক্ষমতা। এই প্রভাব কখনও কখনও অনিদ্রার কারণ হতে পারে। কিন্তু কফি খেলে বহু রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে, এমন ধারণার সত্যতা যাচাই করা অবিলম্বে প্রয়োজন।
তাহলে দেখে নেওয়া যাক সত্যটা কি –
এমন কোন গবেষণা নেই যা প্রমাণ করে যে সীমিত পরিমাণে কফি পান করলেই আপনার এতে আসক্তি জন্মাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু ক্যাফেইন আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, তাই আপনি যদি কফি নিয়মিত পান করেন তবে আপনি এর উপর কিছুটা নির্ভরতা অনুভব করতে পারেন। কিন্তু যদি এক-দুই কাপ কফি আপনার প্রতিদিনের পানীয়র মধ্যে থাকে তা হলে আসক্তি সম্পর্কে চিন্তা করার দরকার নেই একেবারেই।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এখন প্রমাণিত যে, ক্যাফেইন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় না। নরওয়ে এবং হাওয়াইয়ের বিপুল সংখ্যক লোকজনের উপর বেশ কিছু দিন ধরে চলা দুটি সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় বলা হয়েছে যে নিয়মিত কফি বা চা খাওয়া এবং ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে কোনও সম্পর্কই নেই।
যদিও চিকিত্সকরা পরামর্শ দেন যে, গর্ভবতী মহিলাদের সীমিত পরিমাণে কফি পান করা উচিত। তবে যে মহিলারা গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন তাদের এটি এড়ানো উচিত এ রকম কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। প্রজননক্ষমতা এবং ক্যাফেইনের মধ্যে কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই। গর্ভাবস্থার আগে বা গর্ভাবস্থায় সীমিত পরিমাণে কফি পান করা যেতেই পারে যদি না আপনি বিশেষ কিছু শারীরিক জটিলতায় ভোগেন।