প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
ইতোমধ্যে পিয়ার রিভিউ হওয়া সেই গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখতে অভ্যস্ত, সাধারণ লোকজনের তুলনায় তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় ১৬ শতাংশ। তার প্রধান কারণ—যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি স্ক্রিনের সামনে নিষ্ক্রিয় বসে থাকেন এবং টিভি প্রোগ্রাম দেখতে দেখতে চিপস, চকলেট বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খান, তাদের ধমনীতে জমতে থাকে চর্বিজাতীয় পদার্থ।
ধমনির গায়ে যত বেশি চর্বি জমে, ততই রক্ত চলাচলের পথ সরু হতে থাকে। ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ হ্রাস পেতে থাকে এবং চুড়ান্ত পরিণতিতে এ সমস্যা হার্ট অ্যাটাকের মতো বিপর্যয়ের দিকে মোড় নেওয়ার মতো শারীরিক পরিস্থিতি তৈরি করে।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ডা. ইয়াংওন কিম বলেন, ‘দৈনন্দিন যেসব অভ্যাসের কারণে আমাদের দেহে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, সেসবের মধ্যে প্রধানতম হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখা। একদম সহজভাবে বললে, আপনি যত বেশি সময় টিভি দেখবেন, ততই আপনার দেহে করোনারি হৃদরোগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ানকে ডা. কিম জানান, গত ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই গবেষণা প্রকল্পে যুক্তরাজ্যের মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার ২৬ জন মানুষের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের সবারই বয়স ৪০ বছর থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে। চিকিৎসা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী বিএমসি মেডিসিনে ছাপাও হয়েছে এই গবেষণা প্রবন্ধ।
টিভি দেখাজনিত কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে করণীয় প্রসঙ্গে ডা. কিম বলেন, ‘প্রথম কথা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে টিভি প্রোগ্রামে যখন বিজ্ঞাপন বিরতি চলে, সে সময় বসা বা শোয়া অবস্থা থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করলে ভালো।’
‘এবং অবশ্যই টিভি দেখার সময় চিপস, চকলেট বা ফাস্টফুড খাওয়া পরিহার করতে হবে।’