বর্তমানে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেককেই হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছে। ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিলে আতঙ্কিত হবেন না। এই অসুখ থেকে তাৎক্ষণিক আরোগ্য লাভ করা যায় না। বরং ধীরে ধীরে স্যালাইন ও পথ্য গ্রহণের মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ডায়রিয়া হলে কিছু করণীয় উল্লেখ করেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ডায়রিয়া শুরু হলে যা করবেন
* এক প্যাকেট স্যালাইন আধা লিটার জলে গুলিয়ে খাবেন।
* বড়দের (দশ বছরের বেশি) ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর এক গ্লাস (২৫০গ্রাম) জলে গুলিয়ে খাবেন।
* শিশুদের ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর যত কেজি ওজন তত চা চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে আনুমানিত ততটুকু স্যালাইন খাওয়াবেন।
* শিশুর বমি হলে ধীরে ধীরে খাওয়ান, যেমন প্রতি তিন-চার মিনিট পর পর এক চা চামচ করে স্যালাইন খাইয়ে দিন।
* খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি দুই বছরের নিচের শিশুকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে, কোনোভাবেই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।
* ছয় মাসের অধিক বয়সী রোগী খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি সব ধরনের খাবার খেতে পারবে।
* রোগীকে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বেশি বেশি তরল খাবার যেমন ডাবের জল, চিড়ার জল, স্যুপ ইত্যাদি খাওয়াবেন।
* রোগীকে কোমল পানীয়, ফলের রস, আঙুর, বেদানা খাওয়াবেন না।
* ছয় মাস থেকে পাঁচ বছরের শিশুকে প্রতিদিন একটি করে জিংক ট্যাবলেট জলে গুলিয়ে দশ দিন খাওয়াবেন।
* এরপরও রোগীর উন্নতি না হলে বা খারাপ অবস্থা হলে দ্রুত কাছের হাসপাতাল/ স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
ডায়রিয়া থেকে বাঁচার উপায়
* জল ফোটানোর সময় বলক ওঠার পর আরও পাঁচ মিনিট চুলায় রাখুন এবং ঠান্ডা করে পান করুন। জল ফোটানোর ব্যবস্থা না থাকলে প্রতি তিন লিটার জলে একটি জল-বিশুদ্ধিকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে জল নিরাপদ করে নেওয়া যেতে পারে।
* রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর উন্মুক্ত খাবার খাবেন না।
* খাবার আগে সাবান-জল দিয়ে ভালোভাবে বিশ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে নেবেন।
* পায়খানা করার পর অথবা শিশুর পায়খানা পরিষ্কার করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন।
* ফিডারে শিশুকে কিছু খাওয়াবেন না। যদি খাওয়াতেই হয় তবে তার আগে ফোটানো জল ও বাসন পরিষ্কারের সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন। ফিডারের নিপলের ছিদ্রটিও ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন।