এইচআইভি এইডস একটি ভয়ঙ্কর মারণ ব্যাধি। সারা পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ প্রতি বছর এতে প্রাণ হারান। দীর্ঘ সময় ধরে আলাদা কোনও শারীরিক সমস্যা ছাড়াই এই মারণ রোগ শরীরে জাঁকিয়ে বসে। ধীরে ধীরে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়।
তারপর শরীরে কোনও রোগ বাসা বাঁধলে শরীর আর তা সইতে পারে না।
অসুরক্ষিত যৌনজীবন, ওরাল সেক্স, আক্রান্তের রক্ত শরীরে যাওয়া, বাবা-মায়ের শরীর থেকে নবজাতকের শরীরে রক্ত বয়ে আসা, ইত্যাদি নানা কারণে এইডস হতে পারে।
উনবিংশ শতকে পশ্চিম-মধ্য আফ্রিকা থেকে এই রোগ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করা হয়। ১৯৮১ সালে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে। এইচআইভি সংক্রমণের ফলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবছর অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ এইডসের কারণে মারা যান। ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ০.২৬ শতাংশ মানুষ এইডসে আক্রান্ত। তার মধ্যে আলাদা করে দেখলে পুরুষ ০.৩০ শতাংশ ও মহিলা ০.২২ শতাংশ।
তবে বিশ্বের নিরিখে যদি দেখা যায় তাহলে গত দেড় দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে জীবিতের সংখ্যা কমে গিয়েছে। ২০০০ সালে তা ছিল ২কোটি ৭৭ লাখ জন। যা ২০১৬ সালে বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ জন।
নতুনভাবে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেকটা কমে গিয়েছে। ২০০০ সালে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ছিল। ২০১৬ সালে তা কমে হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ জন। অর্থাৎ এইডসের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে হলেও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে মানব সমাজ। অনুন্নত দেশগুলিতে যৌনতা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে এই রোগের প্রকোপ আরও কমে আসবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক এই রোগের লক্ষণগুলো:
১. নারীদের ক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে মেন্সট্রুয়াল সাইকেলের দিকে। স্বাভাবিকের তুলনায় যদি রক্তক্ষরণ কম হতে থাকে বেশ কিছুদিন ধরে, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে আপনাকে।
২. এক সপ্তাহ ধরে কিংবা কয়েক মাস ধরে যদি পেটের গন্ডগোলে ভুগতে থাকেন, তাহলে সাবধান।
৩. দীর্ঘদিনের জ্বরের সঙ্গে যদি হাতে, পায়ে কিংবা কোমরে ব্যথা থাকে, তাহলেও এইডস-এর লক্ষণ হতে পারে।
৪. চোখ, নাক, মুখ, পিঠ, গলায় যদি লাল, গোলাপী, কালো রঙের র্যাশ বেরোতে শুরু করে, তাহলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, অবহেলা করবেন না।
৫. দীর্ঘদিন যদি জ্বরের সঙ্গে যদি গলা ফুলতে শুরু করে, অর্থাৎ গ্ল্যান্ড ফুলে যায়, তাহলে এইডস-এর লক্ষণ হতে পারে।
৬. দিনের পর দিন যদি ওজন কমতে শুরু করে, তাহলে সাবধানে থাকুন।
৭. চার সপ্তাহের বেশি যদি জ্বর থাকে, তাহলে অবহেলা করবেন না। পাশাপাশি প্রতিদিনই যদি ঘুসঘুসে জ্বর থাকে দিনের বেলায়, আর রাতে ঘাম হয়, তাহলে সাবধান। চিকিতসকের পরামর্শ নিন।