প্রযুক্তির অন্যতম এক আশির্বাদ স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও চলে না। কেউ কেই আছেন যারা সারাদিন স্মার্টফোনে চোখ ডুবিয়ে থাকেন। আশেপাশের সব কিছু ভুলে বসে আছেন। এতে করে বাড়ছে চোখ এবং শারীরিক সমস্যা। এটা বড় থেকে ছোট সবার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে।
ছোটদের খাওয়াতে ব্যস্ত মায়েরা এখন মোবাইল কিংবা ট্যাব দিয়ে বসিয়ে রাখেন। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুর মানসিক বিকাশ। বড়রাও কম নন। কাজের ফাঁকে ডুব দেন স্মার্টফোনের দুনিয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গেমিং নানান ক্ষতি করছে শরীরের। এখন তো স্মার্টফোন কাছে না থাকা একটি সমস্যার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘নোমোফোবিয়া’।
স্মার্টফোনে আমাদের এই আসক্তি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বড় ঝুঁকি। এর মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে মানসিকভাবে দুর্বল হতে থাকেন। যারা স্মার্টফোনের ওপর অতি নির্ভরশীল বা আসক্ত হয়ে পড়েছেন, তাদের উচিত হবে এখনই এ আসক্তি ছেড়ে ভালো কিছু নিয়ে চিন্তা করা। এতে হয়তো অকালে আপনার চোখ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে।
তাহলে জেনে নিন কীভাবে স্মার্টফোনের আসক্তি দূর করতে পারবেন-
ফোন ব্যবহারের সময় কমিয়ে দিন
স্মার্টফোন ব্যবহার কমান। দিনে কতবার স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন, তা নির্ধারণ করুন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন দিনে ২০ বারের বেশি স্মার্টফোন দেখবেন না। এ ছাড়া খাওয়া ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না।
ফেসবুক বন্ধ করুন
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে ফেলুন। স্মার্টফোনে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো দরকারি। পারলে এ দুটি অ্যাপ সরিয়ে ফেলুন। স্মার্টফোনে আরও অনেক অ্যাপ আছে, যেগুলো সময় নষ্ট করে। এ ধরনের অ্যাপ সরালে সময় বাঁচবে এবং ফোনের স্টোরেজ ও চার্জ কম ফুরাবে।
নোটিফিকেশন অফ রাখুন
স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন কাস্টমাইজ করুন। নোটিফিকেশন যত কম আসবে, স্মার্টফোন দেখার হার তত কমবে।
ঘুমানোর আগে ফোন বন্ধ রাখুন
ঘুমানোর আগে ফোন বন্ধ করা বিষয়টি অনেকে জানলেও বাস্তবে তা করেন না। ঘুমানোর সময় ফোন বন্ধ করলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই ভেবে ফোন বন্ধ করে দিন। অভ্যস্ত হয়ে গেলে ঘুম ভালো হবে।
অ্যাপের সাহায্য নিন
গুগলের প্লে স্টোরে স্মার্টফোনের ব্যবহার কমাতে পারে এমন অনেক অ্যাপ পাবেন। অ্যাপ ডেটক্স ও রেসকিউ টাইমস এমন দুটি অ্যাপ। অ্যাপ ডাউনলোড করে প্রয়োজন মতো স্মার্টফোনের ব্যবহারে সময় ঠিক করে নিন।
হাতঘড়ি ব্যবহার করুন
স্মার্টফোনের কারণে হাতঘড়ির ব্যবহার প্রায় কমে গেছে। সময় দেখতে মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। একবার স্মার্টফোনে গেলে নোটিফিকেশন, ফেসবুক, টুইটারে ঢুকে পড়ছে। স্মার্টফোনে অ্যালার্মের পরিবর্তে অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করুন। আসক্তি কাটাতে পুরোনো দিনের প্রযুক্তিতে ফিরে যান।
ফিচার ফোন ব্যবহার করুন
স্মার্টফোনের আসক্তি যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে, তবে স্মার্টফোন বাদ দিয়ে ফিচার ফোন ব্যবহার শুরু করুন। টানা এক সপ্তাহ ফিচার ফোন ব্যবহার করে আবার স্মার্টফোনে ফিরতে পারেন। এতে আসক্তি কিছুটা কমবে।