মানুষের শরীরে মূলত দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। ‘হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এইচডিএল’ ও ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এলডিএল’। এর মধ্যে প্রথমটি ভাল কোলেস্টেরল। আর দ্বিতীয়টিকে বলে খারাপ কোলেস্টেরল। খারাপ কোলেস্টেরল শরীরের ক্ষতি করে। বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যতম প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব। কিছু কিছু অভ্যাস শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ভূমিকা রাখে। যেমন-
ভিটামিন ই: এই ভিটামিনে টোকোট্রাইনল নামক উপাদান তাকে যা কোলেস্টেরল হ্রাসে সহায়তা করে। পাশাপাশি, কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে রক্তবাহের ভিতর যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় তা দূর করতেও সহায়তা করে ভিটামিন-ই।
খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ : হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। পাশাপাশি, বেশি তেল-মসলা ও ঘি সমৃদ্ধ খাবারও বাড়িয়ে দিতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে খেতে পারেন ওটস, কাঠবাদাম। মাছও খাওয়া যেতে পারে। তবে সব কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবারই খারাপ নয়। যেমন-ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে।
দ্রবণীয় ফাইবার: ঢেঁকি ছাটা চাল বা ওটসের মতো দানা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ এসব খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থাকে, ফলে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কমে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ: ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। ধূমপানে ভাল কোলেস্টেরল বা এইচডিএলের মাত্রা কমে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। অন্য দিকে নিয়মিত অ্যালকোহল পান করলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায় আশঙ্কাজনক হারে। বিশেষ করে অগ্ন্যাশয় ও লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি খুবই ঝুঁকির। নারীদের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারইড স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় ।
শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। শরীরচর্চা করলে স্থুলতাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।