যাঁরা স্বাস্থ্যসচেতন, তাঁরা কেবল ডিমের সাদাটুকুই খান সাধারণত, সর্বসম্মতিক্রমে ব্রাত্য হয় কুসুমটি৷ কিন্তু কেন? কখনও এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন? সমস্যাটার শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় বছর পঁচিশেক আগে৷ তখনই জানা গিয়েছিল যে হার্টের অসুখের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ কোলেস্টেরল থাকে মূলত ডিমের কুসুমটিতেই, একটি বড়ো ডিমে আন্দাজ প্রায় 185 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল মেলে৷ ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, যে সব খাবারে কোলেস্টেরলের উপস্থিতি আছে, সেগুলি থেকে দূরে থাকাটা একান্ত প্রয়োজনীয়৷ তা হলেই সুস্থ থাকবে হৃদযন্ত্র৷ ফলে প্রোটিনের অত্যন্ত সস্তা আর গুরুত্বপূর্ণ একটি সোর্সের জাত গেল!
ইদানীং অবশ্য আর একটা উলটপুরাণের সৌজন্যে ফের পুরো ডিম খাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ তার কারণগুলো পরিষ্কার৷ ডিমে মোট দু’টি অংশ থাকে, সাদা আর হলুদ৷ সাদা অংশে থাকে প্রোটিন, হলুদ কুসুমটিতে থাকে পুষ্টিগুণ এবং কোলেস্টেরল৷ থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি-ও৷ নানা শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য, বিশেষ করে কলাকোষের পোষণের জন্য কোলেস্টেরল আমাদের লাগবেই৷ তা ছাড়া ভিটামিন ডি, ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন, টেস্টোস্টেরন তৈরিতে এর খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ পিত্তে উপস্থিত অ্যাসিড তৈরিও কোলেস্টেরলের অন্যতম কাজ৷ তাই খাদ্যের মধ্যে দিয়ে যথেষ্টে কোলেস্টেরল না পেলে লিভারকে তা তৈরি করে নিতেই হবে৷ দিনে একটা বা বড়োজোর দু’টি গোটা ডিম খেলে কিন্তু আপনার শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের জোগান বাড়বে, তাই নির্ভয়ে ডিমের কুসুমও খান৷ দূরে থাকুন ট্রান্স ফ্যাট আর অতিরিক্ত চিনি থেকে, তাতে বাড়ে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের পরিমাণ৷ আর ডিম যদি আপনি মাখনে ভেজে, বেকন ইত্যাদি দিয়ে খান, তা হলে কিন্তু বিপদ৷ সেটা এক-আধদিন চলতে পারে, রোজ নয়!