দীর্ঘ তিন বছর তিন মাস উনিশ দিনের জেলজীবনের পর মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেই যেন নিজের পুরনো ছন্দে ফিরে গেলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার ভোরের আগেই বেহালার (পশ্চিম) বিধায়ক হিসেবে নিজের এলাকার মানুষদের উদ্দেশ্যে লিখলেন এক খোলা চিঠি, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
চিঠিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আর্জি ও অভিযোগ:
নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় চিঠিতে বেহালাবাসীর কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, “আমি কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি? আমার নামে কেউ টাকা নিয়েছে কি না, জানাতে অনুরোধ করছি।” আক্ষেপের সুরে তিনি আরও লিখেছেন, “আমার সততার ছবিকে যারা মাটিতে মিশিয়ে দিল, তাদের ছেড়ে দেওয়া সামাজিক অপরাধ।” তিনি বেহালাবাসীকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, “বেহালাবাসীর আশীর্বাদেই পাঁচ বার জিতেছি। মিথ্যা অপবাদের কারণে আমার সম্মান নষ্ট হয়েছে। আমার ছবিটা আপনারাই উদ্ধার করুন।”
প্রশাসনিক কাজে সক্রিয় প্রাক্তন মন্ত্রী:
জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নন, প্রশাসনিক কাজেও ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বুধবারই বেহালার বাড়িতে বসে তিনি SIR-এর এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেন। দীর্ঘ সময় পর এই দৃশ্য তাঁর নতুন করে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার প্রতীক হিসাবে দেখা হচ্ছে।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন:
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করেছিল। কিছুদিন পরই তৃণমূল তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে। জেল থেকে মুক্তির পর মঙ্গলবারই তিনি দলের শীর্ষনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আরও একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছেন, “দলের কোন ধারায় আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল?”
রাজনৈতিক মহলে এখন প্রশ্ন, জেল থেকে বেরিয়ে ফের পুরোদমে রাজনীতিতে ফিরছেন কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়? অনেকে মনে করছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা করছেন। বেহালায় তাঁর এই সক্রিয়তা বর্তমানে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।