ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (SIR) নিয়ে যখন বঙ্গ রাজনীতি উত্তাল, ঠিক তখনই এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে বিতর্কে জড়ালেন খোদ একজন BLO (বুথ লেভেল অফিসার)। নদিয়ার শান্তিপুরে প্রসেনজিৎ সাহা নামে এক BLO-র ভূমিকায় সৃষ্টি হয়েছে এই বিতর্ক।
তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে SIR ও NRC-র বিরোধিতা করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, যিনি নিজেই SIR-এর বিরোধী, তিনি কীভাবে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের কাজ করবেন?
বিএলও প্রসেনজিৎ সাহার ব্যাখ্যা:
শান্তিপুরের বিতর্কিত বিএলও প্রসেনজিৎ সাহা অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তাঁর মতে, তাঁর পেশা এবং ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বিশ্বাস সম্পূর্ণ আলাদা:
“আমি স্কুলে পড়াই। সেখানে আমি বাইরের যে কর্মকাণ্ড বা বাইরের আমার যে বিশ্বাস—সেটা তো আমার পড়ানোর মধ্যে রিফ্লেক্ট হয় না। পড়াতে যাই যখন আমি, তখন আমি শিক্ষক হিসাবে পড়াই। বাইরে যখন আমি কথা বলি, আমার রাজনৈতিক মতামত ব্যক্ত করি, সেটা আমার রাজনৈতিক দর্শন, তার সঙ্গে আমার পেশাকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। আমি কাল যে কথাটা বলেছি, সেটা একবারে স্বাধীন ব্যক্তি হিসাবে আমার রাজনৈতিক বোধ থেকে… কাজ এবং আমার রাজনৈতিক যে কর্মকাণ্ড সেটা আলাদা। সেটা রাজনৈতিক বিশ্বাস… সেটা আলাদা।”
বিজেপির পালটা আক্রমণ:
নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর এই ঘটনাকে “সরাসরি দ্বিচারিতা” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন:
“তিনি নিজে একজন বিএলও। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার। তাঁর মূল কাজ হলো বুথে বুথে গিয়ে মানুষকে এসআইআর সম্পর্কে বোঝানো। তার আগে এই একই ব্যক্তি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমাদের এই যে নির্বাচন কমিশন, তার বিরুদ্ধে যত কথা বলা যায়, সেইসব কথা বলে… বিশেষ করে এনআরসি-র মতো প্রসঙ্গ এবং ১১ দফা ১২ দফা কাগজপত্র রেডি করে রাখার… এই সমস্ত কু-যুক্ত দিয়ে সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে চলেছেন। তিনি কীভাবে নিরপেক্ষভাবে কাজটা করবেন সেটাই মূল প্রশ্ন।”
অন্যান্য জেলাতেও BLO-দের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক:
SIR প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও BLO-দের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হাওড়া ও কাটোয়া: বিজেপি দাবি করেছে, হাওড়া পুরসভার একাধিক BLO সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। একইভাবে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় BLO-র ভূমিকায় রয়েছেন খোদ তৃণমূলের বুথ সভাপতি।
পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরেও বিজেপির অভিযোগ, BLO-র ভূমিকায় রয়েছেন তৃণমূলেরই সক্রিয় কর্মী।
যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এসমস্ত অভিযোগ সটান উড়িয়ে দিয়েছে।