কেরলের বিখ্যাত শবরীমালা মন্দিরে সোনা চুরির ঘটনায় এবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন মন্দিরের প্রাক্তন নির্বাহী আধিকারিক সুধীশ কুমার। তাঁকে ইতিমধ্যেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
‘তামার স্তর’ দেখিয়ে কারচুপি:
তদন্তকারী দল (SIT) জানতে পেরেছে যে সুধীশ কুমার মন্দিরের দরজায় থাকা ভাস্কর্যগুলিতে সোনার প্রলেপ দেওয়া স্তরগুলিকে সরকারি নথিতে মিথ্যাভাবে “তামার স্তর” হিসাবে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। SIT-র দাবি, তিনি জানতেন যে সেগুলি সোনার তৈরি।
সুধীশ কুমার ২০১৯ সালে মন্দিরের এক্সিকিউটিভ অফিসার ছিলেন। তিনি ১৯৯০-এর দশক থেকেই মন্দির প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং জানতেন যে ১৯৯৮–৯৯ সালের মধ্যে মন্দিরের গর্ভগৃহ ও দ্বারপালক মূর্তিগুলি সোনায় মোড়ানো হয়েছিল।
SIT এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে তিনি কারচুপি করে প্রধান অভিযুক্ত উন্নিকৃষ্ণন পোট্টিকে সোনা চুরি করতে সহায়তা করেছিলেন।
২০১৯ সালে যখন মূর্তিগুলির সোনার প্রলেপ নতুন করে দেওয়ার জন্য উন্নিকৃষ্ণণ পট্টির হাতে তুলে দেওয়া হয়, তখন কুমার নথিতে সেগুলিকে ‘তামার পাত’ বলে উল্লেখ করেন।
দুটি পৃথক মামলায় SIT-র তদন্ত:
বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা শবরীমালা মন্দিরের দুটি পৃথক মামলার তদন্ত করছে:
১. দ্বারপালক মূর্তি থেকে সোনা গায়েব হওয়ার অভিযোগ। ২. মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজার ফ্রেম থেকে সোনা উধাও হওয়ার অভিযোগ।
এর আগে শবরীমালার গর্ভগৃহ ‘শ্রীকোভিল’-এর দেওয়ালের মূর্তি থেকে ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তখন অভিযোগ ওঠে, মন্দিরের হিসাবরক্ষকেরা রেকর্ডে সোনার প্রলেপ দেওয়া মূর্তিগুলিকে ‘তামার তৈরি’ বলে লিখেছিলেন।
আরও এক গ্রেফতার ও তল্লাশি অভিযান:
তদন্তে আরও এক অভিযুক্ত—প্রাক্তন প্রশাসনিক আধিকারিক বি. মুরারী বাবুকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান অভিযুক্ত উন্নিকৃষ্ণন পট্টির ঘনিষ্ঠ সহচর বাসুদেবনকেও জেরা করা হয়েছে।
SIT এই কাণ্ডে বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। তদন্তকারী সূত্র জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত উন্নিকৃষ্ণণ পট্টির বেঙ্গালুরুর বাড়ি এবং বল্লারির একটি গয়নার দোকানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখান থেকে সোনার বাট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পট্টিকে শুক্রবার বেঙ্গালুরু নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।