রাজ্যের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যে যখন তীব্র রাজনৈতিক সংঘাত চলছে, তখন বীরভূমে এই প্রক্রিয়া মোকাবিলা করতে কোমর বাঁধল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই বোলপুরে দলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বীরভূম জেলাকে ভোটার লিস্টের কাজে ‘প্রথম ও এগিয়ে’ থাকার কথা অভিষেককে জানানোর দাবি করলেন আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ শতাব্দী রায় ও অসিত মাল সহ শীর্ষ স্থানীয় নেতারা।
এসআইআর নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘নোংরামি’র অভিযোগ
বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল এসআইআর সংক্রান্ত প্রস্তুতি। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেন:
“এসআইআর নিয়ে বিজেপি নোংরামি করার চেষ্টা করছে, মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করছে। তারা বলছে এসআইআরের পরেই এনআরসি চালু করব। আমার মনে হয় এই যে মানুষগুলো মারা যাচ্ছে তারা ভয়ে চিন্তায় মারা যাচ্ছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনের নাগরিকত্ব দেওয়ার বা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা নেই, তারা কেবল বৈধ ভোটারদের নাম তোলার কাজ করবে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বাংলাতে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
চন্দ্রনাথ সিনহা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আমি বলব এসআইআর নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হওয়ার দরকার নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন।”
বীরভূমের প্রস্তুতিতে বিশেষ উদ্যোগ
বৈঠক শেষে অনুব্রত মণ্ডল ও লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ এসআইআর মোকাবিলায় গৃহীত একাধিক সিদ্ধান্তের কথা জানান:
ভোটার লিস্টের প্রস্তুতি: অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, “বীরভূম জেলা প্রথম, এগিয়ে আছে ভোটার লিস্টে। ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট সব বিধানসভায় পৌঁছে গিয়েছে। এটা অভিষেককে বলা হয়েছে আমাদের তরফ থেকে।”
সহায়তা কেন্দ্র: বৈধ ভোটার যাতে বাদ না যায়, তার জন্য গ্রামে-অঞ্চলে অঞ্চলে কমপক্ষে একটি করে সহায়তা কেন্দ্র দলের পক্ষ থেকে খোলা হবে। শহরের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ওয়ার্ডে খোলা হবে।
ওয়্যার রুম: বীরভূমের তিন মহকুমা—সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাটে ওয়্যার রুম খোলা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি বিধানসভাতেও ওয়্যার রুম থাকবে।
❌ ফের বৈঠকে গরহাজির কাজল শেখ
তবে এই বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো কোর কমিটির বৈঠকে গরহাজির থাকলেন, যা নিয়ে বীরভূমের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বৈঠকে এসে সই করেই চলে যান।