দিল্লীর বিস্ফোরণকাণ্ডের ঠিক একদিন পরই পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বীরভূমের নলহাটি থানার সুলতানপুর–নলহাটি রাস্তার সংকেতপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ফোরক উদ্ধার ও গ্রেফতার:
- উদ্ধার: পুলিশ একটি চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে সেই গাড়ি থেকে ৫০ ব্যাগ জিলেটিন স্টিক উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই ব্যাগে মোট ২০ হাজার জিলেটিন স্টিক ছিল।
- গ্রেফতার: এই ঘটনায় নারায়ণ ঘোষ নামে নলহাটি থানার জয়পুর গ্রামের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
- পলাতক: মঙ্গলবার রাতে টহলদারি চালানোর সময় পুলিশ গাড়িটিকে আটক করে তল্লাশি চালায়, কিন্তু গাড়ির চালক ও খালাসি পলাতক।
- আদালতের নির্দেশ: বুধবার ধৃত নারায়ণ ঘোষকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উদ্দেশ্য নিয়ে ধোঁয়াশা:
বিস্ফোরকগুলি কোথায় ও কী কারণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই বিষয়টি বীরভূম জেলা পুলিশ তদন্ত করছে।
- স্থানীয়দের দাবি (খাদানের জন্য): স্থানীয়দের দাবি, ঝাড়খণ্ড এবং বীরভূমের নলহাটি এলাকায় একাধিক বৈধ-অবৈধ পাথর খাদান রয়েছে, যেখানে পাথর ফাটানোর জন্য এই জিলেটিন স্টিক ব্যবহৃত হয়। চোরা পথে ওই সমস্ত খাদানে বিস্ফোরক বহন করা হয়।
- পুলিশের আশঙ্কা (নাশকতার): তবে, দিল্লী বিস্ফোরণের ঘটনার ঠিক পরেই এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় পুলিশ নাশকতার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না।
রাজনৈতিক তরজা:
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ তুলেছেন।
- বিজেপির অভিযোগ: ধ্রুব সাহা বলেন, “ধৃত ব্যক্তি তৃণমূল নেতা। ফলে এর সঙ্গে নলহাটি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়াও শাসক দলের আরও নেতার যোগ রয়েছে।”
- এনআইএ তদন্তের দাবি: বিজেপি নেতা এই ঘটনার তদন্তভার এনআইএ (NIA)-এর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এর আগেও ওই এলাকায় একাধিকবার বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা রাজ্যের আন্তঃরাজ্য সীমানায় নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।