৬জি প্রযুক্তিতে ভারতের জিডিপি বাড়বে ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার! ‘প্রযুক্তি-নির্মাতা’ ভারত নেতৃত্ব দেবে বিশ্বকে, বার্তা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার

আগামী দশকে ৬জি (6G) প্রযুক্তি ভারতের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানিয়েছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে এই প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নয়নের ফলে ভারতের জিডিপি প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি বলেন, ৬জি কেবল দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি দেশের কৃষি, স্বাস্থ্য, স্মার্ট সিটি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা—সব ক্ষেত্রেই এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

প্রযুক্তির ভোক্তা থেকে নির্মাতা ভারত
ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস ২০২৫–এর অধীনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ৬জি সিম্পোজিয়ামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিন্ধিয়া গত এক দশকে ভারতীয় টেলিকম খাতের আমূল পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন।

নেতৃত্বের পথে: মন্ত্রী বলেন, “যেখানে ৪জি–এর সময় আমরা পিছিয়ে ছিলাম, ৫জি–এর ক্ষেত্রে বিশ্বের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছি, সেখানে ৬জি–এর যুগে ভারত নেতৃত্ব দেবে।”

আত্মনির্ভরতা: তাঁর দাবি, সরকার এখন শুধু বিদেশি প্রযুক্তি গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং নিজস্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দিকে নজর দিচ্ছে। সিন্ধিয়া বলেন, “ভারত এখন আর কেবল প্রযুক্তির ভোক্তা নয়, আমরা প্রযুক্তি–নির্মাতা হয়ে উঠছি।”

পেটেন্ট ও কর্মসংস্থানই লক্ষ্য
৬জি প্রযুক্তির উন্নয়নে সরকার, শিল্পজগত ও শিক্ষাক্ষেত্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা তৈরি হয়েছে। “ভারত ৬জি অ্যালায়েন্স”–এর মাধ্যমে দেশীয় মান ও অ্যাপ্লিকেশন গড়ে তোলার কাজ জোরদারভাবে চলছে। মন্ত্রীর কথায়, ৬জি–সংক্রান্ত বৈশ্বিক পেটেন্টের অন্তত ১০ শতাংশ অর্জন করা ভারতের লক্ষ্য।

সিন্ধিয়া আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে টেলিকম ও ট্রান্সমিশন খাতে স্যাটেলাইট যোগাযোগ বাজারের পরিমাণ প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩৩ সালের মধ্যে বেড়ে প্রায় ১৫ বিলিয়নে পৌঁছাবে।

তিনি বলেন, “পিএলআই প্রকল্পের ফলস্বরূপ ইতিমধ্যেই ৯১,০০০ কোটি টাকার নতুন উৎপাদন হয়েছে, ১৮,০০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে এবং প্রায় ৩০,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।”

যোগাযোগমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, “ভারত এখন এক আত্মনির্ভর ডিজিটাল জাতিতে পরিণত হচ্ছে। সেই দিন আর দূরে নয়, যখন বিশ্ব বলবে—ভারতের ওপর নির্ভর করছে গোটা দুনিয়া।” তাঁর স্লোগান, ‘এখানেই তৈরি করুন, এখানেই সমাধান করুন’— যা ৬জি-কে কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নয়, বরং ভারতের আত্মনির্ভর অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখায়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy