মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলো নাটকীয় ভোলবদল। গত মাস পর্যন্ত যিনি নিজেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের সক্রিয় দাবিদার হিসেবে তুলে ধরছিলেন, সেই ট্রাম্পই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুরে কথা বললেন। তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন বিপুল পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে “১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব।” ট্রাম্পের এই বিতর্কিত মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে পারমাণবিক অস্ত্রের ভারসাম্য এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
☢️ কেন পারমাণবিক পরীক্ষা শুরুর নির্দেশ ট্রাম্পের?
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, ৩৩ বছর ধরে বন্ধ থাকা পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা আবার শুরু করার জন্য তিনি পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তান গোপনে এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের মন্তব্য:
“যদি অন্য দেশগুলো পরীক্ষা করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে থাকবে কেন? যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র দেশ হিসেবে পরীক্ষা বন্ধ রাখার কোনও মানেই হয় না।”
তিনি জানান, তিনি এ বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
💣 ‘বিশ্বের যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি অস্ত্র আছে’
ওয়াশিংটনে ওই সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
“আমাদের কাছে বিশ্বের যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। আমাদের কাছে এমন পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।”
তিনি আরও যোগ করেন, “রাশিয়ারও প্রচুর পারমাণবিক অস্ত্র আছে। আর চীন—তারা এখনো তুলনামূলক কম হলেও দ্রুতই বড় শক্তি হয়ে উঠছে।”
এরপরও তিনি বলেন, “আমার মনে হচ্ছে, এখন বিশ্বব্যাপী নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আমাদের কিছু করা উচিত।”
🕊️ সংঘাত সমাধানে মধ্যস্থতার দাবি
অন্যদিকে, ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, তিনি একাধিক আন্তর্জাতিক সংঘাত সমাধানে ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনা কমাতে তার মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। নিরীহ মানুষের প্রাণ রক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে তিনি সবসময়ই মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী বলে জানান।
শান্তির দূত হিসেবে নিজেকে দাবি করা এবং একই সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা নিয়ে হুঁশিয়ারি— ট্রাম্পের এই দ্বৈত সুর বিশ্ব রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।