২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সুন্দরবনের দুই ভিন্ন স্থানে কুমিরের হানায় কম্পন সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবী মহল্লায়। মাছ ধরতে গিয়ে দুই মৎস্যজীবীর মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে। একদিকে কুমিরের মুখে পড়েছেন এক মৎস্যজীবী, অন্যদিকে নিখোঁজ হয়েছেন আরও একজন।
হাড়িভাঙা খালে নিখোঁজ বিশ্বজিৎ
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের হাড়িভাঙা খালে। ঝড়খালি কোস্টাল থানার অন্তর্গত ২ নম্বর ঝড়খালি গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সর্দার (৫২)। রবিবার সকালে তিনি তপন মিস্ত্রী, দিলু বৈরাগী ও বাবলু মিস্ত্রির মতো তিন সঙ্গীর সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন।
বিশ্বজিতের সঙ্গীরা জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎ যখন খালে নেমে জাল পাতছিলেন, তখনই আচমকা একটি কুমির তাঁকে টেনে জলের গভীরে নিয়ে যায়। চিৎকার শুনেও ভয়ে কেউ আর খালে নামতে পারেননি। খবর পেয়ে সকালে ঝড়খালি থানা ও বনকর্মীদের বিষয়টি জানানো হলেও, রবিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও বিশ্বজিৎ সর্দারের কোনও খোঁজ মেলেনি। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জাল টেনে মৃত্যু শঙ্কর হাতির
অন্যদিকে, প্রায় একই সময়ে আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পাথরপ্রতিমা ব্লকের জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানা এলাকায়। উত্তর সুরেন্দ্রগঞ্জ এলাকার জগদ্দল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কুমিরের হানায় মৃত্যু হয়েছে মৎস্যজীবী শঙ্কর হাতির (৪৫)-এর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শঙ্করবাবু নদীতে জাল ফেলেছিলেন। কিন্তু সেই জালে মাছের পরিবর্তে উঠে আসে একটি কুমির। মাছ ভেবে জাল টানার জন্য জলে নামতেই কুমির এসে তাঁকে টেনে জলের ভিতর নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী লঞ্চ ও নৌকা নিয়ে তল্লাশি শুরু করে। স্থানীয় মানুষ, বন দফতর ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ তল্লাশি চালিয়েও শনিবার রাতে শঙ্করের হদিশ পাওয়া যায়নি। অবশেষে রবিবার ভোরে জগদ্দল নদী থেকে উদ্ধার হয় শঙ্কর হাতির দেহ।
কুমিরের জোড়া হানায় দুই মৎস্যজীবীর এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে দুই পরিবারেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া, একই সঙ্গে সুন্দরবনের নদী সংলগ্ন গ্রামগুলিতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।